নিজস্ব প্রতিবেদক:
বড় হয়ে মিরপুরের ‘ডন’ হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলো হৃদয় (১৭)। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতেই জড়িয়ে পড়েন অপরাধের রাজ্যে। ১৭ বছরের সেই কিশোর হৃদয় এখন হত্যা মামলার আসামি হয়ে কারাগারে। প্রবাসীর জমিসংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে দুই লাখ টাকার চুক্তিতে গত ১২ ডিসেম্বর রাতে শাহাদাত হোসেন হাসিবকে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে হৃদয় ও তার সহযোগীরা। সেই মামলায় হৃদয়কে ঝালকাঠি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হৃদয় এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই হত্যার সঙ্গে জড়িত আরও চারজনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে শাহ আলী থানা পুলিশ।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর মিরপুর উপ-পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এ জেড এম তৈমুর রহমান।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রথমে হৃদয়কে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে ৪০টি মোবাইল নম্বরের তথ্য বিশ্লেষণ করে হৃদয়ের নম্বর পাওয়া যায়। ঘটনার পর হৃদয় নিজেকে আড়াল করতে ঢাকা থেকে চাঁদপুরে যায়। সেখান থেকে ভোলায় গিয়ে অবস্থান নেয়। পুলিশ যাতে তাকে ধরতে না পারে, তাই সেখানে বেশিদিন অবস্থান না করে ঝালকাঠি যায়। সর্বশেষ সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এ জেড এম তৈমুর রহমান বলেন, শাহাদাত হোসেন হাসিব নামে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় রাজধানী ও ঝালকাঠি থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন, মোফাজ্জল হোসেন মন্ডল (৩০), হুমায়ুন কবির (৬৫), মো. সাদ্দাম (১৬), আল-আমিন আহমদ (১৮) ও মোহাম্মদ হৃদয় (১৭)।
এডিসি তৈমুর রহমান বলেন, শাহাদাত হোসেন হাসিব হত্যার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, মূলত পৈতৃক সম্পত্তির বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়। আর এ হত্যাকাণ্ডের পাঁচজন জড়িত। সরাসরি জড়িত তিনজন। গ্রেফতার হৃদয় ও সাদ্দাম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগী হাসিবের বাবার সঙ্গে প্রবাসী বিপুল নামে এক ব্যক্তির বাবার জমিসংক্রান্ত মামলা ছিল নোয়াখালীতে। সেই মামলার জের ধরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন গ্রেফতার মোফাজ্জল হোসেন মন্ডল। পরিকল্পনা অনুযায়ী হৃদয়য়ের সঙ্গে দুই লাখ টাকায় চুক্তি করেন মোফাজ্জল। তবে হত্যাকাণ্ডের পর চুক্তি অনুযায়ী টাকা দেওয়া হয়নি হৃদয়কে।
বিএসডি/জেজে