নিজস্ব প্রতিবেদক
গাজীপুরের শ্রীপুরে ডাকাতের হামলায় নিহত সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকের অসহায় ৮ সদস্যের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামে বিএনপির পক্ষ থেকে ওই পরিবারের খোঁজখবর নেন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন মেয়ে, দুই ছেলে, মা, বোন ও এক নাতনিকে সুখের সংসার ছিল ডাকাতের হামলায় নিহত অটোরিকশা চালক আবুল কালামের। আটজনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম আবুল কালামকে গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাতে শ্রীপুরের মাওনা-সাতখামাইর-বরমী আঞ্চলিক সড়কের সাতখামাইর বাজারের চেরাগআলী মাজার এলাকায় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির সময় ডাকাত দল অটোরিকশা চালক আবুল কালামকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে ৮ সদস্যকে নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় স্ত্রী পারুল আক্তারকে। স্বামীর মৃত্যুর পর অসহায় হয়ে পড়া পরিবারটির এমন অসহাত্বের খবর শুনে ছুটে যান অধ্যাপক ডা.রফিকুল ইসলাম বাচ্চু।
তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন তিনি। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনায় গঠিত নিপীড়িত নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা সেল থেকে সহায়তা দেওয়া হবে।
নিহতের স্ত্রী পারুল আক্তার জানান, অন্যের জমিতে ৪০ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন তারা। অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারের হাল ধরেছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম আবুল কালাম। দিনে ছেলে ও রাতে বাবা অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি কৃষি কাজ করতো। গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১১টার দিকে তিনি অটোরিকশা নিয়ে বের হন। মধ্যরাতে ডাকাতের হামলায় আহত হওয়ার খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবা আবুল কালামকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান ছেলে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। এ সময় তাকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আবুল কালামের উপার্জনে তিনিসহ তিন মেয়ে, দুই ছেলে, মা ও বোনের সংসার অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন তারা।
অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, যাত্রীসহ অটোরিকশা আটকে ডাকাতি করতে বাধা দেওয়ায় চালককে নৃশংসভাবে হত্যা করে ডাকাতদল। আমরা পরিবারটির পাশে থাকতে এখানে এসেছি। পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে, এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের বিচার যাতে হয় তার জন্যও আইনগত সহায়তাও বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়া হবে। পরিবারটির ভিটেমাটি বলতে কিছুই নেই, অন্যের জমিতে বসবাস করে। স্থানীয় সমাজসেবক আব্দুল হেকিম ও তার দুই ভাই পরিবারটিকে পাঁচ শতাংশ জমি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মোসলেহ উদ্দিন মৃধা, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এসএম মাহফুল হাসান হান্নান, আহ্বায়ক সদস্য আবদুল হান্নান সজল, বিএনপি নেতা বশির আহমেদ কাজল, বিএনপি নেতা রমজান আলী, ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রিপন ফকির, যুবদল নেতা সালেহ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।