আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের চেয়েও দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। একইসঙ্গে ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে ইতোপূর্বে যারা টিকা নিয়েছিলেন, ওমিক্রনে সংক্রমণের হাত থেকে তারাও রেহাই পাচ্ছেন না। এমনকি করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিরাও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে ফের আক্রান্ত হচ্ছেন।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস একথা বলেন। সোমবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন সদর দফতরে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, ‘করোনার ডেল্টা ধরনের তুলনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট উল্লেখযোগ্যভাবে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে বলে ধারাবাহিক প্রমাণ রয়েছে। করোনার টিকা নিয়েছেন এমন ব্যক্তি এবং এমনকি ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিরাও আক্রান্ত বা পুনঃসংক্রমিত হচ্ছেন।’
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন জানিয়েছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সফলভাবে মানবদেহের কিছু রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আক্রমণ বা দুর্বল করতে সক্ষম হচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে বিশ্বে বহু দেশে যে বুস্টার ডোজ কর্যক্রম চলছে, তাতে দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
ডব্লিউএইচও’র কর্মকর্তারা বলছেন, কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার ফলে মানব শরীরে যে অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হচ্ছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সেটিকে নষ্ট করতে পারে বলেই দেখা যাচ্ছে। তবে শরীরের আরও অনেক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে যেগুলো ভাইরাসের সংক্রমণ ও অসুস্থতা ঠেকিয়ে দিতে পারে।
স্বামীনাথন আরও বলেন, ওমিক্রন মোকাবিলায় সকল টিকাই যে পুরোপুরি অকার্যকর হবে সেটি আমরা মনে করি না। তবে তার আশঙ্কা, ওমিক্রনের কারণে বহুসংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারেন। যার কারণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ বেড়ে যেতে পারে।
এর আগে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের একটি গবেষণায় জানানো হয়, ভাইরাসের ডেল্টা বা মূল করোনাভাইরাসের তুলনায় ৭০ গুণ বেশি দ্রুতগতিতে মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে ওমিক্রন। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের ফুসফুসের টিস্যুতে সংক্রমণের মাধ্যমে মূল করোনাভাইরাস যে ধরনের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে গুরুতর অসুস্থতার সম্ভাবনা তার চেয়ে ‘১০ গুণেরও অধিক’ কম।
এতে আরও বলা হয়, একজনের কাছ থেকে অন্যজন সহজে সংক্রমিত হলেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুসের ততটা ক্ষতি করে না যতটা ভাইরাসের পূর্ববর্তী স্ট্রেনগুলো করতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই ভ্যারিয়েন্টকে গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর অনুযায়ী ‘ওমিক্রন’ নামকরণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এসএ