গত শনিবার ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল—বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ কি এটাই? উত্তরে, সাংবাদিকের সঙ্গে একমত পোষণ করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। একই সময়ে সাকিব শুনিয়েছিলেন ব্যাটারদের ব্যর্থতার গল্প, এর পেছনের কারণ। এতসব মন খারাপের ভীড়েও একটা জায়গায় কিছুটা স্বস্তি নিয়ে কথা বলেছেন সাকিব—বোলিং ইউনিট। আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে, পেস বোলিং ইউনিট।
ভারত বিশ্বকাপের মাঝপথে এসে আসরের সেরা রান সংগ্রাহকের শীর্ষ ১৫ জনের তালিকায় একজনও নেই বাংলাদেশের। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২১৮ রান করে ১৯ নম্বরে আছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে বোলিংয়ে ১৫ নম্বরে আছেন শরিফুল। তাছাড়া স্কোয়াডে থাকা বাকি চার পেসারের আর কেউই সবগুলো ম্যাচ খেলেননি। তাসকিন কিংবা মুস্তাফিজ সব ম্যাচ খেললে হয়তো তাদের আরো ওপরে দেখা যেতো।
সবমিলিয়ে আসরে বাংলাদেশি পেসারদের পারফরম্যান্স খারাপ বলা যাবে না। বরং ভারতের ব্যাটিং স্বর্গে সেরাটাই দিচ্ছেন তারা। কিন্তু বছর কয়েক আগেও টাইগার শিবিরের সবচেয়ে চিন্তার কারণ ছিল পেস ইউনিট। দেশ কিংবা দেশের বাইরে স্পিনাররাই ছিলেন বোলিংয়ে ভরসার অস্ত্র। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেই চিত্র এখন অনেকটাই বদলে গেছে। তাসকিন-মুস্তাফিজদের পারফরম্যান্স গ্রাফে এমন উন্নতির পেছনে বড় অবদান অ্যালান ডোনাল্ডের।
২০২২ সালের মার্চে বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন অ্যালান ডোনাল্ড। তিনি বাংলাদেশে এসে প্রথমে যে কথাটা শুনেছিলেন, সেটা এখনো মনে রেখেছেন।
আইসিসিকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ বলেন, ‘আমি যখন ঢাকার মিরপুরে প্রথমবার আসি, তখন সবাই বলেছে, ‘স্পিন বোলারের দেশে স্বাগতম।’ মাঝে মধ্যে আমরা চার স্পিনারও খেলিয়েছি। সেখানে আমরা এভাবেই ম্যাচ জিততাম। কিন্তু আমি সবসময় বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ যদি দেশের বাইরে জিততে চায়; দেশের বাইরে সবসময়ই ভালো উইকেটে খেলা হয়। ওইসব উইকেট অনেক সময় স্পিন বান্ধব হয় না, যেখানে আমাদের খেলা হয়। এরপর সব পরিবর্তন হতে থাকে। পেসাররা ম্যাচ শুরু করে, পরে দুয়েকজন স্পিনার আসে।’
‘বাংলাদেশের পেসারদের ভালো উন্নতি হয়েছে। এক এক জনের সঙ্গে আমার আলাদা আলোচনায় অথবা দলগত আলোচনায় যা বুঝেছি তাদের (পেসারদের) সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই আমাকেই মানসিকতায় বদল আনতে হয়েছে। আমি বলেছি, ফ্ল্যাট উইকেটেই সবসময় খেলতে হবে এবং সব জায়গায় খেলতে হবে। বিশ্বের সব দেশের বোলারদের মানসিকতাই একইরকম। আমাদের কোনো এক্সপ্রেস পেস বোলার নেই। তবে আমাদের অনেক দক্ষ বোলার আছে। আমি তাদের একইভাবে ভাবতে শিখিয়েছি এবং আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে বোলিং করতে বলেছি।’-আরো যোগ করেন তিনি।