নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফরিদপুরে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ওয়াজ মাহফিল বন্ধের নির্দেশনা দেওয়ায় হাইওয়ে থানার সামনে রাখা যানবাহন ভাঙচুর করেছে উত্তেজিত জনতা। এ সময় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধও করা হয়। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় সোমবার রাতে কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। হামলার ঘটনায় এখনও কেউ আটক হয়নি।
রবিবার রাতে জেলার সদর উপজেলার কানাইপুরের করিমপুর হাইওয়ে (অস্থায়ী) থানার অভ্যন্তরে এ হামলা চালানো হয়। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কানাইপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর এলাকায় একটি পাটকল মাঠে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় মারকাজুত তাকওয়া ইসলামি মাদ্রাসা ও সরদারবাড়ি জামে মসজিদের উদ্যোগে এ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
রবিবার সন্ধ্যা থেকে ওয়াজ মাহফিল শুরু হয়। রাত ৯টার দিকে মাহফিলের মাইকে আবু ত্বহা বক্তব্য দেবেন না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রশাসনের আপত্তির কারণ দেখিয়ে তখন ওয়াজ মাহফিলও বন্ধ করা হয়। এতে মাহফিলে উপস্থিত শ্রোতাদের একটি অংশ বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে। আরেকটি অংশ ঘটনাস্থল থেকে খানিকটা দূরে অবস্থিত হাইওয়ে থানার অভ্যন্তরে রাখা গাড়ি ভাঙচুর করে। তারা সেখানে পুলিশের দুটি গাড়ি, একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করে।
পরে ফরিদপুর থেকে দাঙ্গা পুলিশ এসে শটগানের গুলি ছুড়ে রাত ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
মাহফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা রকিব আল হাসান সরদার বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ফোন দিয়ে আবু ত্বহাকে মঞ্চে ওঠাতে এবং বক্তব্য দিতে নিষেধ করে। এ ঘোষণায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তার দাবি, হামলা ও ভাঙচুরের সঙ্গে আয়োজকদের কেউ জড়িত নয়। এলাকার একটি পক্ষ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
এ বিষয়ে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফকির বেলায়েত হোসেন বলেন, মাহফিল আয়োজকরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাদের প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে অনুমতি নেওয়ার পরামর্শ দিই। কিন্তু তারা সেটি না করে প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে মাহফিলের আয়োজন করেন। প্রশাসন অনুমতিবিহীন ওয়াজ মাহফিলের বিষয়টি জানতে চায় এবং বন্ধ করতে বলে। এর পর থানার অভ্যন্তরে ও যানবাহনে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তিনি এ ঘটনা তদন্তপূর্বক সঠিক বিচার ও শাস্তি দাবি করেন।
করিমপুর হাইওয়ে থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, থানায় হামলা, যানবাহন ভাঙচুর ও পুলিশ সদস্যদের আহত করার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।
ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ওসি এমএ জলিল বলেন, হাইওয়ে থানায় হামলার ঘটনায় সোমবার রাতে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। একটি মামলা করিমপুর হাইওয়ে থানার (অস্থায়ী) ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে এজাহারনামীয় সাতজনসহ অজ্ঞাত চার থেকে ৫০০ এবং অন্য মামলাটি হাইওয়ে থানার বাড়ির মালিক বাদী হয়ে এজাহারনামীয় তিনজনসহ অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এখনও কোনো আসামি আটক হয়নি।
বিএসডি/ এলএল