চীন এবং তাইওয়ানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, স্বশাসিত তাইওয়ানকে ‘পুনরেকত্রীকরণের’ জন্য বেইজিংয়ের বল প্রয়োগের দরকার নেই।
বুধবার মস্কোতে রাশিয়ার জ্বালানি সপ্তাহ সম্মেলনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন পুতিন। সিএনবিসিকে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে দেশের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে সক্ষম চীন।
রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আমি মনে করি চীনের বল প্রয়োগের প্রয়োজন নেই। চীন বিশাল শক্তিশালী অর্থনীতি। ক্রয় সমতার ক্ষেত্রে চীন এখন আমেরিকার তুলনায় বিশ্বের এক নম্বর অর্থনীতি।’
‘এই অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে, চীন তার জাতীয় উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সক্ষম। আমি কোনও ধরনের হুমকি দেখছি না।’
চলতি মাসের শুরুর দিকে তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের শান্তিপূর্ণ ‘পুনরেকত্রীকরণ’র অঙ্গীকার করেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। একই সঙ্গে এ বিষয়ে বেইজিং যে কোনও বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপের কঠোর বিরোধিতা করে বলে দৃঢ়ভাবে জানান তিনি।
গত রোববার শিন জিনপিংয়ের মন্তব্যের জবাবে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বলেন, তার সরকার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করবে; যাতে ‘আমাদের আত্মরক্ষার জন্য দৃঢ় সংকল্প প্রদর্শন করা যায়’।
চলতি অক্টোবরের প্রথম চারদিনই চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) তাইওয়ানের আকাশসীমায় প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। চীনের গণমাধ্যমের খবরে যুদ্ধবিমানের এই অনুপ্রবেশকে শক্তিপ্রদর্শন বলে মন্তব্য করা হয়। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার চীনের এ ধরনের কার্যক্রমকে ‘ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে।
চীনা বিমানের অনুপ্রবেশের এই ঘটনায় বেইজিংয়ের সঙ্গে তাইপের চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষের তাইওয়ানকে নিজেদের একটি প্রদেশ হিসেবে মনে করে চীন। সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে তাইওয়ান স্বশাসনে চললেও প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে তা দখলে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
সাই ইং-ওয়েন নেতৃত্বাধীন সরকারকে চীন বিচ্ছিন্নতাবাদী মনে করে। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্ট সরকার চীনের শাসন ক্ষমতা দখল করার পর তাইওয়ান মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিন্তু চীন বলছে, তাইওয়ানের স্বাধীনতা মানেই যুদ্ধ।
সূত্র: এএনআই, রয়টার্স।