আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চীন সবসময় বিশ্ব শান্তিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় বলে সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সম্প্রতি তাইওয়ানে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ফলে চলমান আলোচনা-সমালোচনার জবাবে এ কথা বলেছেন তিনি।
বিবৃতি তিনি বলেন, ‘চীন সবসময় দৃঢ়ভাবে শক্তি প্রদর্শন ও প্রভাব বিস্তারের রাজনীতির বিরোধী; বরং চীন বিশ্বাস করে- আঞ্চলিক সংঘাত, সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু, সাইবার ও প্রকৃতির নিরাপত্তার মতো ইস্যুসমূহে বিশ্বের সব দেশের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’
গত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। অন্যদিকে তাইওয়ান বরাবরই নিজেদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে অনড় অবস্থান নিয়ে আছে।
সম্প্রতি তাইওয়ানে ঘন ঘন নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জানান দিচ্ছে চীন। চলতি অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানার মধ্যে ১৫০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল দেশটি। তারপর থেকেই চীন-তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এই উত্তেজনা আরও বেড়েছে তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মন্তব্য ও তার প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাল্টা মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ানে সামরিক অভিযান শুরু করে, সেক্ষেত্রে এই দ্বীপরাষ্ট্রটির পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, তাইওয়ানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
তার এ মন্তব্যের পরেই চীনের পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন পাল্টা এক বিবৃতিতে বলেন, চীন কখনও তার মৌলিক স্বার্থগত ইস্যুতে কোনো ছাড় দেয় না। তাইওয়ান বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আরও সতর্ক হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
উভয়ের এই মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যের ফলে ‘চীন খুব দ্রুত তাইওয়ানে সামরিক অভিযান চালাতে যাচ্ছে’ এমন একটি ধারণা যখন দানা বেঁধে উঠছিল, তখনই সাম্প্রতিক এই বিবৃতি দিলেন শি জিনপিং।
এদিকে, বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ দক্ষিণ চীন সাগরে চীন অন্যায়ভাবে অন্যান্য দেশের জলসীমা দখরলের অভিযানে নেমেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে চীন বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সোমবারের বিবৃতিতে চীনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টি সবসময় মনুষ্যত্ব ও বৈশ্বিক মানবিক মূল্যবোধসমূহকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। সেই অবস্থান থেকে চীন মনে করে, সবদেহের সক্রিয় অংশগ্রহণ ব্যতীত বিশ্বজুড়ে শান্তি, উন্নতি, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা কায়েম সম্ভব নয়।’