ডেস্ক নিউজ-
আফগান সরকার ও সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন তালিবান নেতাদের মধ্যে ফের শুরু হয়েছে শান্তি আলোচনা। দেশটিতে শান্তি ফেরাতে শনিবার (১৭ জুলাই) কাতারের রাজধানী দোহায় শুরু হয়েছে দুই দিনের এই বৈঠক।
বিশ্লেষকদের মতে, এক দিকে চলছে দুপক্ষের মধ্যকার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ-যুদ্ধ। তার তা বন্ধ না করেই কাতারে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে দুই পক্ষ। শান্তি আলোচনায় আফগান সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ। আলোচনা শুরুর একদিন আগে শুক্রবার (১৬ জুলাই) তিনি দোহায় পৌঁছান। আলোচনায় যোগ দিয়েছেন আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। এছাড়া তালিবান প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের রাজনৈতিক উপপ্রধান মোল্লা বারাদার।
বৈঠক শুরুর আগেই আফগান সরকারের প্রতিনিধিদলের প্রধান আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ বলেছেন, দেশে সংঘর্ষ চলার মধ্যেই এই বৈঠক হচ্ছে। ফলে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টাই থাকবে প্রধান আলোচ্য বিষয়। এছাড়া বৈঠকে সরকারি বাহিনী ও তালিবানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও তালেবান বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
সম্প্রতি আফগানিস্তান জুড়ে নতুন করে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে তালিবান। আফগানিস্তানের ২৯টি প্রদেশের ১১৬টি জেলা নিজেদের দখলে নিয়েছে তারা। তালিবান যোদ্ধাদের দখলে থাকা জেলাগুলোতে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে। যারা বঞ্চিত হচ্ছেন নানাবিধ নাগরিক সুবিধা থেকে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা। ১৫ জুলাই কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন আফগান সরকারের প্রশাসনিক সংস্কার বিষয়ক কমিশনের চেয়ারম্যান আহমাদ নাদের নাদেরি। এ সময় নাদেরি আরও জানান, ১১৬টি জেলা দখল করার সময় তালিবান ধ্বংস করেছে নানা সরকারি স্থাপনা। বাজার মূল্য হিসেবে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ কোটি ডলার।
২০০১ সালে মার্কিন-নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত হয় তালিবান। এরপর দেশটিতে গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় এবং একটি নতুন সংবিধান গৃহীত হয়। কিন্তু তালিবান এরপর এক দীর্ঘ বিদ্রোহী তৎপরতা শুরু করে। ক্রমান্বয়ে তারা আবার শক্তি সঞ্চয় করে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনীকে আরও বেশি করে সংঘাতে জড়িয়ে ফেলে। কিন্তু এখন মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান থেকে তাদের সবশেষ সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর থেকে আফগান সরকার ও তালিবানের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করে। তালিবান জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের ৮৫ ভাগের বেশি এলাকা দখল করেছে। যদিও এ পরিসংখ্যান নিয়ে বিতর্ক আছে। আফগান সেনারা দেশটিতে তালিবান যোদ্ধাদের অগ্রগতি থামাতে হিমশিম খাচ্ছে।
সূত্র : আল-জাজিরা, তোলো নিউজ
বিএসডি/এমএম