আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহামারি করোনা ভাইরাসের সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগে থাইল্যান্ডে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এ সময় তারা কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যর্থতার দায়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান ওচার পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা বলেছেন, প্রথম দিকে মহামারির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সম্প্রতি তা বাড়তে শুরু করায় দেশের অর্থনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে।
ব্রিটিশ মিডিয়া বিবিসি নিউজ জানিয়েছে, রাজধানী ব্যাংককে বিজয় স্মৃতিস্তম্ভের নিকটবর্তী সড়কে কন্টেইনার দিয়ে পথ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রশাসনের লোকজন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান ওচার বাসভবনমুখী পদযাত্রা ঠেকাতে সড়কটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পরবর্তীকালে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি, টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
ব্যাংকক পুলিশের মুখপাত্র কৃষ্ণ পট্টানাচারোয়েন বলেছেন, জনতা নিয়ন্ত্রণে টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়েছে। শৃঙ্খলা বজায় রাখাই আমাদের উদ্দেশ্য। যদিও বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পিং পং বোমা, পাথর এবং মার্বেল ছুড়েছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
এবার বিক্ষোভস্থল থেকে কয়েকডজন আন্দোলনকারীকে মোটরসাইকেল এবং অ্যাম্বুলেন্সে করে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরাওয়ান এমার্জেন্সি মেডিক্যাল সেন্টার বলছে, বিক্ষোভ-সহিংসতায় কমপক্ষে দুজন বেসামরিক এবং পুলিশের তিন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
আওম নামে ২৩ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী বলেছিলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুতের পদত্যাগ চাই। কারণ জনগণ পর্যাপ্ত টিকা পাচ্ছে না। চলমান বিক্ষোভ দমনের আশঙ্কায় পুরো নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান এই বিক্ষোভকারী। তিনি বলেছিলেন, আমাদের কাজ নেই, এমনকি নেই উপার্জনও। এবার প্রতিবাদ ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই।
বিশ্লেষকদের মতে, ছয় কোটি ৬০ লাখ মানুষের এই দেশটির মাত্র ৬ শতাংশ মানুষকে এখন পর্যন্ত পুরোপুরি টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। রাজধানী ব্যাংককসহ দেশটির অধিকাংশ এলাকায় লকডাউনের পাশাপাশি রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। বর্তমানে পাঁচজনের বেশি মানুষের একত্রিত হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গত শনিবারও থাইল্যান্ডে একদিনে রেকর্ড ২২ হাজার জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া একই দিনে মৃত্যু হয়েছে ২১২ জনের। যা এখন পর্যন্ত দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সাত লাখ ৩৬ হাজার ৫২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ছয় হাজার ৬৬ জনের।
সূত্র : রয়টার্স
বিএসডি/এমএম