নিজস্ব প্রতিবেদক
তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় দাবানলের হুমকিতে থাকা বিদেশি পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দাবানলের আগুন এখন সৈকতের কাছে থাকা হোটেল ও স্থানীয় বাড়িঘরকেও হুমকিতে ফেলে দিয়েছে।
প্রাইভেট নৌকা ও ইয়টের মাধ্যমে অবকাশযাপনকারীদের নিরাপদস্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তুরস্কের উপকূলরক্ষীরা। বোদরুম শহরের তিনটি পাঁচ-তারকা হোটেল খালি করে দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার থেকে দাবানলের আগুন জ্বলছে। এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
তুরস্কের ভূমধ্যসাগরীয় ও এজিয়ান উপকূলের বিভিন্ন রিসোর্ট ও গ্রামে শতাধিক আগুনের বিরুদ্ধে লড়ছেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত ১০টির মতো আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
বোদরুমের মেয়ারের শেয়ার করা একটি ছবিতে দেখা গেছে, রোববার (১ আগস্ট) সকালেও সেখানে আগুন জ্বলছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ভিডিওফুটেজে দেখা যাচ্ছে, লোকজন তাদের জিনিসপাতি নিয়ে আগুন থেকে পালিয়ে বাঁচতে চেষ্টা করছেন। এতে জঙ্গলে ঢাকা পাহাড় থেকে লোকালয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।
তবে কোথাও ইচ্ছাকৃত অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে কিনা; তা তদন্ত করে দেখছেন দেশটির কর্তৃপক্ষ। একজন সন্দেহভাজন অগ্নিসংযোগকারীকে গ্রেপ্তারের খবরও শোনা যাচ্ছে।
এদিকে দেশটির দক্ষিণ উপকূলীয় বনাঞ্চলগুলোতে জ্বলতে থাকা দাবানল ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও অধিকাংশ এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান। শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান তিনি। এসময়ে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের সবধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
একইসঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে আজারবাইজান, রাশিয়া এবং ইরান থেকে সহায়তা নেওয়ার কথা জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
এদিকে যতই সময় যাচ্ছে ততই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে দাবানল। এরইমধ্যে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় ১৭টি প্রদেশের শতাধিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। বনভূমি থেকে ছড়িয়ে পড়ছে লোকালয়ে।
পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে আজিয়ান সাগর উপকূলবর্তী পর্যটন নগরী মারমারিস। সেখানকার বেশ কয়েকটি রিসোর্টে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে পর্যটন ব্যবসা। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে দেশি বিদেশি বহু পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। অগ্নিনির্বাপক পাঁচটি প্লেন, ৪৫টি হেলিকপ্টার এবং ড্রোনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে এক হাজারেরও বেশি দমকলকর্মী।
শনিবার দাবানল পরিস্থিতি সরেমজমিন পরিদর্শনে যান এরদোয়ান। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে সহযোগিতা।
এরদোয়ান জানান, এখন সময় এককতার। ভ্রাতৃত্ব আর সংহতির মাধ্যমে আমরা এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে চাই। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ আমরা দ্রুত অধিকাংশ জায়গায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। দমকলকর্মী বাড়াতে ইউক্রেন, রাশিয়া আজারবাইজান এবং ইরান থেকে সহিযোগিতা নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিবেশী দেশ গ্রিসেও দাবালন পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টার থেকে ছিটানো হচ্ছে পানি। তবে তীব্র দাবদাহের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বিএসডি/এমএম