নিজস্ব প্রতিবেদক
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে জুলাই আন্দোলনকারীরা। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন ব্যর্থতায়। এ কারণে দিনাজপুর সফরে গিয়ে সেখানে তোপের মুখে পড়েন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান গেটে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পথরোধ করে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা উপদেষ্টার কাছে জানতে চায় সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে দেশত্যাগ করে চলে গেলেন।
জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে দেশত্যাগে যারা যারা সহযোগিতা করছেন তাদের শুধু পদত্যাগ না, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে, যদি শাস্তির আওতায় না আনতে পারি তাহলে আমি চলে যাব।
এর আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিং করে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। পরে সেখান থেকে যাওয়ার সময় জুলাই আন্দোলনকারীরা তার পথরোধ করে।
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ঘিরে ধরেন এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকার পরেও কীভাবে দেশ ত্যাগ করলেন, তা জানতে চান। তখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এমন অকল্পনীয় ও অভাবনীয় কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে সরকার।
তিনি আরও বলেন, আমি জানতাম না, এখানে আসার পর জেনেছি। জানার পরে যেখানে যেখানে কথা বলার দরকার কথা বলেছি। এ ঘটনায় যারা যারা জড়িত তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। আপনারা যে পরিস্থিতিতে আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন সেই পরিস্থিতি থেকে এখন পর্যন্ত অনেক উন্নতি হয়েছে তো।
এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, আপনারা (সরকার) আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। এখন রাষ্ট্র কারা পাহারা দিচ্ছেন? সবকিছু ঘটনা ঘটার পর হবে, আমরা কীভাবে বিশ্বাস করবো আপনারা জানেন না, প্রবাসীরা একটার বেশি দুইটা মোবাইল নিয়ে আসলে এক মুহূর্তে ইমিগ্রেশন পুলিশ সেটা ধরে ফেলে কিন্তু একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে ইমিগ্রেশন পার হয়ে চলে গেল, আর আপনারা জানেন না কীভাবে বিশ্বাস করবো?
তারা আরও বলেন, আপনি দিনাজপুরে এসেছেন, আমরা জুলাই আন্দোলনে যারা আহত আছি আমরা প্রথম সারির যোদ্ধা ছিলাম, কিন্তু আমাদেরকে ডাকেননি। আমাদের ওপর এই পুলিশ প্রশাসনই গুলি করেছে। আমরা সংস্কার চেয়েছিলাম কিন্তু হয়নি।
এসময় জুলাই আন্দোলনকারীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দিনাজপুরের প্রতিনিধি একরামুল হক আবির, রেজাউল ইসলামসহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আশ্বাসের পর শিক্ষার্থীরা পথ ছেড়ে দেন।
এ সময় সম্প্রতি ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী–বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশে ‘পুশ–ইনের’ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের কেউ ভারতে থাকলে প্রোপার চ্যানেলে দেশে আসবে, ভারতের কেউ থাকলে প্রোপার চ্যানেলে যাবে।
সরকারের ভেতরে ছাত্র প্রতিনিধিরা কোণঠাসা অবস্থায়, মাহফুজ আলমের এমন পোস্টের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকারের ভেতরে যারা আছেন, সবার সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত হয়।