নিজস্ব প্রতিবেদক:
উত্তরের জেলা দিনাজপুরে এবার আগেভাগেই নেমেছে শীত। ক্রমান্বয়ে কমছে তাপমাত্র। সন্ধ্যা হলেই নামছে কুয়াশা, সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। থাকছে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত। এর মধ্যে বাড়ির বাইরে বের হতে হলেই পড়তে হচ্ছে শীতের গরম কাপড়। সকালবেলা ঘন কুয়াশায় হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে গাড়ি।
দিনাজপুর আবহওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের বর্ষায় তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দিনের বেলায় ছিল প্রচণ্ড গরম। জুলাই-আগস্টে দিনাজপুরে দিনে তাপমাত্রা ছিল ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে অক্টোবরে জেলায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে।
স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাত যেখানে ১২০ থেকে ১৩০ মিলিমিটার, সেখানে গত মাসে মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে ৪৪২ মিলিমিটার। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে রাতের তাপমাত্রা নেমে গেছে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জুর রহমান জানান, এ বছর বর্ষায় বৃষ্টিপাত কম হলেও অক্টোবরে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে শীত একটু তাড়াতাড়ি নামছে। বর্তমানে দিনে তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করলেও রাতে তা নেমে যাচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। নভেম্বরে শেষের দিকে তাপমাত্রা আরও কমবে।
এদিকে দিন দিন তাপমাত্রা কমতে থাকায় ব্যস্ততা বেড়েছে জেলার লেপ-তোশক সেলাইয়ের দোকানে। শীতের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এখনই লেপ-তোশক বানিয়ে নিচ্ছেন মানুষ। বিভিন্ন গরম কাপড়ের দোকানেও ইতোমধ্যে শীতকালীন পোশাক টাঙিয়ে রাখতে দেখা গেছে। লেপ-তোশক ব্যবসায়ী সেলিম রোজা জানান, শীত আগেভাগেই আশায় লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে দোকানে।
দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজারের জাবেদ সুপার মার্কেটের তৈরি পোশাকের ব্যবসায়ী জাফর ইকবাল রানা বলেন, এ বছর তাড়াতাড়ি শীত আসবে মনে হচ্ছে। শীতের বিভিন্ন পোশাক আনা শুরু করেছি। শীতের পোশাক বিক্রিও শুরু হয়ে গেছে।
চিরিরবন্দরের শেখ রাসেলে স্টেডিয়াম-সংলগ্ন পিঠা ব্যবসায়ী জোসনা বেওয়া বলেন, এবার শীত একটু আগেভাগেই নামছে। তাই শীতের ভাপা ও চিতই পিঠার দোকান দিয়ে বসছি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিঠা তৈরি করি।
অন্যদিকে অক্টোবরের অতিরিক্ত বর্ষণে আগাম আলুর কিছুটা ক্ষতি হলেও আমন ধান এবং শীতকালীন সবজির জন্য আগাম শীতকে আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. খালেদুর রহমান।
তিনি জানান, অতিরিক্ত বর্ষণে আগাম আলুর কিছুটা ক্ষতি হলেও আমন ধানের জন্য এটি ভালো। এ বছর ভরা বর্ষায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আমনে অতিরিক্ত সেচ দিতে হয়েছে। এছাড়া শীতকালীন বিভিন্ন সবজির জন্যও এটা অনেক উপকারী। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই বাজার শীতকালীন বিভিন্ন সবজিতে ভরে উঠবে।
বিএসডি /আইপি