নিজস্ব প্রতিবেদক:
দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগ থেকে চুরির ২০ ঘণ্টা পর নবজাতক শিশু কন্যাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিউলি আরা নামে এক নারীকে আটক করা হয়। এছাড়া প্রসূতির বোন হাজেরা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে বলে জানান কোতয়ালী থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন।
আটক শিউলি আরা (৩৫) দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের জয়দেবপুর বালাপাড়া এলাকার মোস্তাফিজারের স্ত্রী। এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে।
গত সোমবার দুপুরে হাসপাতালের গাইনি বিভাগ থেকে প্রসূতি জাহেদা বেগমের নবজাতক শিশুকন্যা চুরি হয়ে যায়। এরপর পুলিশের জোর তৎপরতায় মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের জয়দেবপুর বালাপাড়া এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে উদ্ধারকৃত ওই নবজাতককে হাসপাতালে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেন দিনাজপুর পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালি থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন, ডিবির ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. পারভেজ সোহেল রানা প্রমুখ। এসময় পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে ওই নবজাতকের মায়ের হাতে বিভিন্ন ধরনের ফলমূলও তুলে দেওয়া হয়।
দিনাজপুর পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান চালায় পুলিশ। চুরি হওয়ার ২০ ঘণ্টার পর ওই নবজাতককে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা শিউলি আরা নামে একজনকে আটক করেছি। প্রথম স্বামীর সংসার ভেঙে যাওয়ার পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন শিউলি। প্রথম স্বামীর ঘরে সন্তান থাকলেও দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে সন্তান না হওয়ায় সংসার ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে তিনি এ কাজ করেন।
সন্তানকে ফিরে পেয়ে ওই নবজাতকের মা জাহেদা বেগম বলেন, আমার বাচ্চাকে ফিরে পেয়ে ভালো লাগছে। পুলিশ স্যারেরা কষ্ট করে আমার বাচ্চা কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন এজন্য ধন্যবাদ। আর যে আমার বাচ্চাকে চুরি করেছিল তার বিচার চাই।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল পৌন ৯টার দিকে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে নবজাতক ওই শিশুটির জন্ম হয়। জন্ম নেওয়া শিশুকন্যার মা প্রসূতি জাহেদা বেগম (৩৬) দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার মাহাদানী গ্রামের আব্দুল লতিফের স্ত্রী।
সোমবার সকালে একটি শিশুকন্যা জন্ম দেন তিনি। দুপুরের পর তার প্রস্রাবের চাপ হলে নবজাতক শিশুকন্যাকে তার বোন হাজেরা বেগমের কাছে রাখে। এসময় অজ্ঞাত এক নারী হাজেরাকে বলে অসুস্থ বোনকে প্রস্রাব করাতে নিয়ে যান। শিশুকন্যাকে আমাকে দেন। হাজেরা বেগম সরল বিশ্বাসে নবজাতক শিশুকন্যাকে ওই নারীর কাছে দিয়ে প্রসূতি বোনকে প্রস্রাব করাতে টয়লেটে নিয়ে যান। টয়লেট থেকে ফিরে এসে দেখেন ওই অজ্ঞাত নারীটি নবজাতক শিশুকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পারভেজ সোহেল রানা জানান, বিষয়টি জানার পর পুলিশকে জানানো হয়েছে। সোমবার রাতেই পুলিশের বিভিন্ন টিম শিশুটিকে উদ্ধারের হাসপাতালের সিসি ফুটেজ থেকে শনাক্ত করে এবং তৎপর হয়ে ওঠে।
বিএসডি/ এলএল