নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরগুনায় দুইবার পুলিশে চাকরি হয়েও বাল্যবিয়ের অজুহাতে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার নাতনি কলেজ শিক্ষার্থী তৈয়বুন্নেছা তুলি। চাকরি না পাওয়ায় ওই শিক্ষার্থী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি চরম হতাশায় ভুগছেন।
তৈয়বুন্নেছা তুলি বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া গ্রামের মো. তোফাজ্জেল হোসেনের মেয়ে। দাদা মৃত সৈয়দ আলী আবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তুলি বর্তমানে বরিশাল সরকারি বিএম কলেজে আনার্স শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত।
তুলির পরিবার সূত্রে জানা যায়, অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় তুলির বাল্যবিয়ে হয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই বিয়ে ভেঙে যায়। মুখে বিয়ে হলেও হয়নি কাবিন, নেই প্রমাণাদিও। বরপক্ষেরও বিয়ে নিয়ে কোনো ধরনের দাবি কিংবা অভিযোগ নেই। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ ভেরিফিকেশনে দুইবার প্রার্থীর বিয়ে হয়েছে বলে তথ্য দেওয়ায় বাল্যবিয়ের অভিশাপে আটকে গেছে এ শিক্ষার্থীর জীবন।
আরও জানা যায়, বরগুনা জেলায় ২০১৫ সালের ৭ নভেম্বর এবং ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল পুলিশে নিয়োগ পরীক্ষায় তুলি দুইবার উত্তীর্ণ হয়ে নারী কনস্টেবল পদে চূড়ান্ত হয়। কিন্ত পুলিশ ভেরিফিকেশনে তাকে বিবাহিত বলে বরগুনা পুলিশ সুপারের কাছে তথ্য দেয়ায় এ বিয়ের অজুহাতে নারী কনস্টেবল পদে তার ভর্তি বাতিল হয়।
তুলির বাবা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, বাল্যবিয়ের কথা বলার পরেও অজ্ঞাত কারণে ভেরিফিকেশনের দায়িত্বে থাকা পুলিশের তৎকালীন কর্মকর্তারা বিয়ের কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপারকে তথ্য দিলেও ভেরিফিকেশনে বিয়ের কোনো প্রমাণাদি সংযুক্ত করতে পারেনি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও কর্তৃপক্ষের কাছে সেই সময় আকুতি মিনতি জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এখন এসআই পদে আবেদন করে তুলি পুলিশের কর্মকর্তা হতে চায়।
তৈয়বুন্নেছা তুলি বলেন, সরকার চাইলে এখনও সব কিছুই পারেন। একজন মুক্তিযোদ্ধার নাতনি হিসেবে দেশের সেবা ও আমার বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য চাকরি ফিরে পেতে চাই।
বিএসডি/ এলএল