নিজস্ব প্রতিবেদক,
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশিকে ফেরত আনতে বিএসএফ-বিজিবির মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে। রোববার (২৯ আগস্ট) বুড়িমারী সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত স্থায়ী পতাকা বৈঠক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)।
এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে ৬১ ব্যাটালিয়নের বুড়িমারী বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার শরিফুল ইসলাম ও ভারতের ১৪৮ রাণীনগর ব্যাটালিয়নের চ্যাংরাবান্ধা ক্যাম্প কমান্ডার রাজকুমার শেঠী নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করে গরু পারাপারে বাধা দেওয়ার ঘটনা ও গুলিতে দুজন বাংলাদেশি নিহতের কথা জানায় বিএসএফ। উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৬ জন করে সদস্য অংশ নেন।
নিহতরা হলেন বুড়িমারী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বুলবুল হোসেনের ছেলে ইউনুছ আলী (২৭) ও নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ধনবর রায়ের ছেলে সাগর চন্দ্র (৩৮)।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত দুই বাংলাদেশি নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রোববার ভোরে ওই ইউনিয়নের বুড়িমারী সীমান্তের ৮৪২ নম্বর মেইন পিলার ও ৩-৪ নম্বর সাব পিলারের কাছ দিয়ে বাংলাদেশি ৭-৮ জনের গরু পারাপারকারীর একটি দল গরু আনতে যায়। ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহায়তায় কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে গরু পারপারের সময় ভারতীয় ১৪৮ রাণীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়ন ও জলপাইগুড়ি সেক্টরের চ্যাংরাবান্ধা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা গুলি ছোড়েন।
এতে বুড়িমারী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বুলবুল হোসেনের ছেলে ইউনুছ আলী (২৭) ও নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ধনবর রায়ের ছেলে জগন্নাথ রায় সাগর (৩৮) গুলিতে নিহত হয়। তাদের মরদেহ ভারতের চ্যাংরাবান্দা এলাকার শ্মসানঘাট এলাকায় ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পড়ে থাকে।
এরপর ভারতের মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ভারতের জলপাইগুড়ি সেক্টরের বিএসএফের ডিআইজি সঞ্জয় পাল, ১৪৮ ব্যাটালিয়নের সেকেন্ড ইন কমান্ডার মুহিত কোঠিয়াল, কোম্পানি কমান্ডার রাজ কুমার শেঠী, মেখলিগঞ্জ পুলিশের সার্কেল ইন্সপেক্টর পূরণ রায়, মেখলিগঞ্জ থানার ওসি রাহুল তালুকদার। নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ভারতের মাথাভাঙ্গা মর্গে নিয়ে যায় পুলিশ।
বিজিবি জানায়, বিএসএফের আহ্বানে বুড়িমারী স্থলবন্দর সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত স্থায়ী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দুই পক্ষের ৬১ ব্যাটালিয়নের বুড়িমারী বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার শরিফুল ইসলাম ও ভারতের ১৪৮ রাণীনগর ব্যাটালিয়নের চ্যাংরাবান্ধা ক্যাম্প কমান্ডার রাজকুমার শেঠী নেতৃত্ব দেন।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক জানান, সীমান্তের কাছাকাছি মানুষের ভিড়ের খবর পাওয়ার পর পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে সেখান থেকে এলাকার মানুষকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিএসডি/আইপি