নিজস্ব প্রতিবেদক:
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিতর্কিত সাংবাদিক ড. কনক সারওয়ারের বোন নুসরাত শাহরীন রাকার বিরুদ্ধে করা পৃথক ২ মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ৩ দিন এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় ২ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
বুধবার (৬ অক্টোবর) ডিজিটাল নিরাপত্তা করা মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় আসামি নুসরাত শাহরীন রাকাকে ৭ দিন করে রিমান্ড চায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক বদরুল মিল্লাত। এ সময় উভয় আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের পৃথক এ আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) ভোরে রাজধানীর উত্তরা থেকে নুসরাতকে আটক করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় আটকের বিষয়টি জানিয়েছে র্যাব। তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানিয়েছে, দেশ-বিদেশে অবস্থান করে একটি চক্র রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার করছে। এদের বেশ কয়েকজন সদস্য বিদেশে অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার চালাচ্ছে। যারা দেশীয় এজেন্টদের সঙ্গে যোগসাজশে এ ধরনের অপকর্ম করছে তাদের ধরতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) ভোরে উত্তরা থেকে নুসরাত শাহরীন রাকাকে আটক করে। তার স্বামী নাসির উদ্দিন মজুমদার মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী।
র্যাব বলছে, রাষ্ট্রবিরোধী কন্টেন্টসহ একটি মোবাইল, একটি পাসপোর্ট ও আইস নামের মাদকও উদ্ধার করা হয়েছে রাকার কাছ থেকে।
র্যাব জানায়, নুসরাত শাহরীন রাকা রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারকারী ও ষড়যন্ত্রকারী চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে মিথ্যাচার, বিভ্রান্তিকর, মানহানীকর তথ্য ছাড়াও বিভিন্ন উস্কানিমূলক তথ্য প্রচার করছিলেন তিনি। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টের অপচেষ্টায় ছিলেন। চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্য বিদেশে অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন অপপ্রচারের সঙ্গেও জড়িত। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশে তারা অপপ্রচার চালাচ্ছিল।
র্যাব আরও বলছে, ‘আটক রাকা বিদেশে অবস্থানরত তার ভাই ও সমমনাদের বিভিন্ন সহযোগিতা করেছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।’
ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগে ইউটিউবসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যম থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে কনক সারওয়ারের কন্টেন্ট সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এক সময়ের বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কনক সারওয়ার বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী হিসেবে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে মূলত সরকারবিরোধী নানা কনটেন্ট তৈরি করেন তিনি।