বর্তমান সময় ডেস্কঃ
পদ্মা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় জেগে ওঠা ডুবোচরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফলে পদ্মা পার হতে সময় লাগছে দ্বিগুণ, এতে বেড়েছে ফেরির জ্বালানি খরচ।
জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদীর পানির গভীরতা কমে ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় গত দুই সপ্তাহ যাবৎ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলকৃত ফেরিগুলো প্রায় ৬ কিলোমিটার ঘুরে নদী পাড় হচ্ছে। নদীতে পানির গভীরতা কম থাকায় বড় ফেরিগুলো নির্দিষ্ট চ্যানেল ছেড়ে প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার ভাটি পথ ঘুরে চলাচল করছে। এতে নদী পাড় হতে সময় লাগার পাশাপাশি বেড়েছে ফেরির জ্বালানি খরচ।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটে বর্তমানে ছোট-বড় ১৮টি ফেরি রয়েছে। অবরোধে যানবাহন তেমন না থাকায় দিনে বড় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকছে। স্থানীয় এবং ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপার হওয়ায় ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি চালু রয়েছে। পানির গভীরতা কমে যাওয়ায় প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সরাসরি ফেরি চলাচল করতে পারছে না। প্রতিটি ফেরি চলাচলের জন্য কমপক্ষে ৮ ফুট পানির গভীরতা থাকা দরকার। কিন্তু নদীতে পানি কমে এই নৌপথের বিভিন্ন পয়েন্টে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় পানির গভীরতা না থাকায় চলাচলকারী বড় ফেরিগুলো নির্দিষ্ট চ্যানেল ছেড়ে গোয়ালন্দ উপজেলার আংকের শেখেরপাড়া ঘুরে চলাচল করছে। মাত্র ৩ কিলোমিটার নৌপথ পাড়ি দিতে ঘুরতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৬ কিলোমিটার পথ। এতে অতিরিক্ত ২০ মিনিটের মতো সময় বেশি লাগছে ও বেড়েছে জ্বালানি খরচ।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলাচলরত ফেরি কেরামত আলীর মাস্টার আশরাফুল ইসলাম বলেন, দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া নৌপথের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। পানির গভীরতা কমে ডুবোচর জেগে ওঠায় সরাসরি ফেরি চলাচলে নিষেধ রয়েছে। বাধ্য হয়ে প্রায় দ্বিগুণ পথ ঘুরে আমাদেরকে প্রাকৃতিক চ্যানেল দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। আগে পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া পৌঁছাতে ৩৫/৪০ মিনিট লাগলেও বর্তমানে উভয় ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১৫/২০ মিনিট সময় বেশি লাগছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, বর্ষাকালে নদী ভরাট থাকায় পর্যাপ্ত পানি থাকে। ফেরি চলাচলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করতে পারে। এই শুষ্ক মৌসুমে প্রতিদিন পানি কমছে। এছাড়া এই নৌরুটের ডুবোচর জেগে ওঠায় উপায় না পেয়ে দুই সপ্তাহ ধরে দীর্ঘপথ ঘুরে ফেরি চলাচল করতে হচ্ছে। এই নৌ-রুটে ছোট-বড় মিলে ১৮টি ফেরি থাকলেও প্রয়োজন অনুসারে ফেরি চালানো হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আহমেদ আলী বলেন, সাধারণত শীত মৌসুমে পানি দ্রুত কমতে থাকে। দ্রুত পানি কমে যাওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের পাটুরিয়া ঘাটের কাছাকাছি ডুবোচর জেগে উঠেছে। ফলে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে ফেরি চলাচল করছে।
বিএসডি/আরপি