নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্বল্পমেয়াদি জীবনকাল, সার-পানি সাশ্রয়ী, আলোক সংবেদনশীল, উন্নত গুণাগুণ সম্পন্ন ও খরাসহিষ্ণু হওয়ায় কৃষকের মাঝে আশার আলো জাগিয়েছে আমন মৌসুমে বিনা-১৭ জাতের ধান চাষ।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এর উপকেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ পরিচালিত গবেষণা ও সম্প্রসারণ অংশ হিসেবে মঙ্গলবার মাঠ দিবস পালিত হয়। দুপুর আড়াইটায় নিয়ামতপুর উপজেলার শালাবাড়ি মাঠে ধান কর্তনের পর বটতলী হাটে আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিনা-১৭ জাতের ধানে পানি কম লাগার কারণে একে গ্রিন সুপার রাইস নামেও অভিহিত করেছেন অনেকে। এ জাতের ধানে ইউরিয়া সার এক-তৃতীয়াংশ ও সেচ ৫০ শতাংশ কম লাগে। ধানের জীবনকাল ১১০-১১৫ দিন। এর প্রতি শীষে ২০০-২৫০টি দানা থাকে এবং ফলন আশাব্যঞ্জক হওয়ায় কৃষকের জন্য এ জাতের ধান চাষ খুবই লাভজনক। প্রতি বিঘায় প্রায় ২২-২৫ মণ ফলন হয়ে থাকে। অন্যান্য ধানের তুলনায় আবাদে ২-৩ হাজার টাকা খরচ কম হয়।
শালবাড়ি গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম খলিল বলেন, চার বিঘা জমিতে বিনা-১৭ জাতের ধান রোপণ করেছেন। এ জাতের ধান চাষে সেচ, সার, ওষুধ ও পানির খরচ অনেকটাই কম। একসঙ্গে ধান রোপণ করে আমার জমির ধান কাটা হচ্ছে। আর পাশের জমিতে এখনো প্রায় ২০-২৫ দিন পর্যন্ত ৩-৪ সেচ দিতে হবে। আগে স্বর্ণা-৫ জাতের আবাদ করতাম। সে তুলনায় বিঘাপ্রতি আমার ২-৩ হাজার টাকা খরচ কম পড়েছে।
ঘুলকুড়ি গ্রামের কৃষক মফিজ উদ্দিন বলেন, আমরা নতুন ধানের গুণাবলি বিষয়ে জানতাম না। পাশের জমিতে একসঙ্গে লাগিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। আবার ফলনও ভালো। আর আমারটা এখনো ২০-২৫ দিন সময় লাগবে। বাস্তবে দেখলাম বিনা-১৭ জাতের ধান স্বল্প সময়ে আবাদ হয়েছে। এ ধান কাটার পর রবিশষ্য রোপণ করা হবে। যে জমিতে দুই ফসল হতো সেখানে এখন তিন ফসল করা সম্ভব। আগামীতে এ জাতের ধান চাষে নিজে লাগানো পাশাপাশি আশপাশের সবাইকে উদ্বৃদ্ধ করব।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ও জুবায়ের আল ইসলাম, নওগাঁ জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম মঞ্জুরে মওলা, নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমির আবদুল্লাহ মো. ওয়াহিদুজ্জামান, কৃষক ইব্রাহিম খলিলসহ স্থানীয় কৃষকরা।
বিএসডি /আইপি