বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে তিনজন সাক্ষী আসবেন বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, নাইকো দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালে বিদেশি সাক্ষী হাজির করতে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের শুনানি শেষে আদালত আজ সাক্ষী হাজির করতে অনুমতি দিয়েছেন। সাক্ষীরা কবে আসবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটির এখনো দিন-ক্ষণ ঠিক হয়নি। এর আগে কেরাণীগঞ্জ কারাগার-সংলগ্ন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান সাক্ষী আনার আবেদন মঞ্জুর করেন।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যার্টনি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বেগম জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমিনুল ইসলাম।
কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রায় ১৪ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ক্ষতি করার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন।
প্রায় ১৬ বছর পর এ বছরের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।
খালেদা জিয়া ছাড়াও নাইকো দুর্নীতি মামলার অন্য আসামিরা হলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও তৎকালীন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন মুখ্যসচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এর মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অন্য আসামিদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন বর্তমানে কারাগারে আছেন। নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ পলাতক রয়েছেন। বাকিরা জামিনে আছেন।