নিজস্ব প্রতিবেদক,
টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নাটোরে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের প্রথম ইউনিব্লকের রাস্তা। ইটের বদলে ইউনিব্লক প্রযুক্তি দিয়ে গ্রামীণ এই জনপদে রাস্তা নির্মাণ করার পর নজর কাড়ছে সবার।
সুলতানপুর-আওরাইল গ্রামীণ সড়কটি পরিবেশবান্ধব ও নান্দনিক হওয়ায় বদলে গেছে এই সড়ক সংলগ্ন এলাকার পরিবেশ। ইটের ব্যবহার না করে প্রথমবারের মতো ইউনিব্লক দিয়ে নির্মিত এই সড়ক দেখতে অনেকেই ছুটে যাচ্ছেন সদর উপজেলার সুলতানপুর-আওরাইল এলাকায়।
নাটোর সদর উপজেলার হালসা ইউনিয়নে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ দশমিক ৮৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দৃষ্টিনন্দন সুলতানপুর-আওরাইল রাস্তাটি নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)।
জানা যায়, অধিদপ্তরের উল্লিখিত নির্দেশনা অনুসরণ করে নাটোর জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ইউনিব্লকে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত অর্থবছরে পাইলট প্রকল্প হিসেবে নাটোর সদর উপজেলার হালসা ইউনিয়নের সুলতানপুর-আওরাইল পর্যন্ত ১ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ দশমিক ৮৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। তিন মিটার প্রস্থ রাস্তার উভয় পাশে ৬ ইঞ্চি করে কংক্রিটের কার্ভস্টোন রাস্তাকে আরও টেকসই করেছে।
আরও জানা যায়, সিমেন্ট, বালু আর পাথরে ৫০, ২৫, ১৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার এক-একটি ইউনিব্লকের চাপ ধারণক্ষমতা ইটের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। মাঝে লাল রঙের ব্লক ব্যবহার করায় যানবাহন খুব সহজেই রাস্তার পরিমাপ অনুযায়ী চলতে পারছে। এতে বেড়েছে সৌন্দর্যও।
সরেজমিনে সুলতানপুর-আওড়াইল সড়কে দেখা যায়, দুই ধারে সবুজের বুক চিরে দৃষ্টিনন্দন রাস্তায় অসংখ্য মানুষ হাঁটছে। গ্রামের বধূরাসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও রয়েছে এ তালিকায়।
আহম্মদপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব আহমেদ বলেন, পিচঢালা রাস্তাটা দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। তাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত এ রাস্তা নতুন প্রযুক্তিতে ইউনিব্লকে নির্মাণ করায় আমরা খুব খুশি। মোটরসাইকেল স্লিপ করার ভয় নেই এ রাস্তায়। আবার দুপাশে খানিকটা ঢালু থাকায় বৃষ্টির পানিও রাস্তায় জমে থাকছে না।
আওড়াইল মধ্যপাড়ার কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, আবাদি শস্য নিয়ে হাটে যেতে আর কোনো চিন্তা নেই আমাদের। এখন সেই কষ্ট থেকে মুক্তি পেলাম।
নাটোর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এম শহিদুল ইসলাম বলেন, অধিদপ্তরের নির্দেশনায় গ্রামীণ জনপদের ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ২ হাজার ৭৬ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হবে। পর্যায়ক্রমে ইউনিব্লকে নির্মাণ করে ২০২৪ সালের মধ্যে শতভাগ লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টায় কাজ করছি আমরা। নতুন এ প্রযুক্তির রাস্তা সারাদেশের মধ্যে নাটোরেই প্রথম নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং কাজের মান উন্নত হওয়ায় অনুসরণীয় হয়েছে।
তিনি বলেন, পরিবেশবান্ধব এই রাস্তার নির্মাণ খরচ একটু বেশি হলেও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অনেক কম এবং রাস্তার স্থায়িত্ব অনেক বেশি। এই রাস্তা যানবাহনের অধিক ভার বহনের উপযোগী। বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হলেও থাকবে নিরাপদ।
বিএসডি/আইপি