নিজস্ব প্রতিবেদক,
নাটোরে আমের রোগ-বালাই আর পচনের হাত থেকে বাঁচতে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমের সুন্দর গঠন, আকর্ষনীয় রং, পোকা ও বিষ মুক্ত হওয়ায় তা এখন দেশের সীমানা পেড়িয়ে রপ্তানিও হচ্ছে দেশের বাইরে। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ফ্রুট ব্যাগিং ব্যাপক সহায়ক। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই চাষীদের আগ্রহ বাড়ছে ফ্রুট ব্যাগিংএ।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দেশের তৃতীয় আম উৎপাদনকারী জেলা নাটোরে ১৩ জাতের আম উৎপাদন করেন চাষিরা। কয়েক বছর থেকেই মৌসুমে আমের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন বাগানি ও ব্যবসায়ীরা। তবে লেট ভ্যারাইটির আম উৎপাদনকারী কিছুটা ভালো দাম পেলেও তাদের ক্ষতির কারণ ছিল পোকার আক্রমন আর পচন রোগ। তবে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করে সেই সংকটও কাটিয়ে উঠেছে নাটোরের আম চাষিরা।
জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার আম বাগান মালিক শিক্ষক আব্দুল আওয়াল জানান, দেরিতে সংগ্রহ করা যায় এমন জাত আশ্বিনা, ফজলি, গৌড়মতিসহ বিভিন্ন আমে ফ্রুট ব্যাগিং করায় আমে পোকা ও পচনের আক্রমণ রোধ হচ্ছে। এতে আমের অনন্যগঠন ও রঙ দৃষ্টি কাড়ছে ক্রেতাদের। এছাড়া নিরাপদ বিষমুক্ত ফল উৎপাদনেও ব্যাপক সহায়ক এই পদ্ধতি। এতে করে শুধু দেশের বাজার নয় এই আমগুলো রপ্তানির দ্বার খুলে দিচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকেই এই আম রপ্তানি করছেন বিদেশে। তাই ফ্রুট ব্যাগিং এ ঝুকছে আম চাষিরা।
নাটোর সদর উপজেলার আম বাগান মালিক কৃষি উদ্যোক্তা সেলিম রেজা জানান, মাত্র কয়েক বছর আগেও লেট ভ্যারাইটির আম নিয়ে দুঃশ্চিন্তার শেষ ছিলনা আম চাষিদের। বৃষ্টিপাত ও পোকার আক্রমনে পানির দামে বিক্রি করতো উৎপাদিত আমগুলো। দু’এক বছর লাভের মুখ দেখলেও বেশির ভাগ সময় লোকসান গুনতে হতো তাদের। তবে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে সেই সংকট কাটিয়ে এখন লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি বিভাগ আরও জানায়, জেলায় এ বছর প্রায় ১৬ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং এর লক্ষমাত্রা নেয়া হয়েছে। তবে তা অতিক্রান্ত হয়েও এখনো ব্যাগিং কার্যক্রম চলমান বলে জানান তারা। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ব্যাগিং পদ্ধতি যুগান্তকারী পদ্ধতি বলেও জানান কৃষি সংশ্লিষ্টরা।
বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোমরেজ আলী জানান, প্রথমে প্রকল্প নিয়ে ভর্তুকি দিয়ে হলেও ফ্রুট ব্যাগিং যে লাভজনক, চাষিদের তা বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন তারা। বর্ষা মৌসুমে কীটনাশক ছিটিয়েও যেখানে আমের রোগ দূর করা যেতো না সেখানে ব্যাগিং করলে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজনই হয় না, আম হয় আকর্ষনীয় ও বিষমুক্ত। এছাড়া ব্যাগগুলো একাধিক বার ব্যবহারও করা যায় বলে জানান তিনি।
বিএসডি/আইপি