রাশিয়ার কারাবন্দী বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠন নিষিদ্ধ করেছেন মস্কোর একটি আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল বুধবার মস্কোর ওই আদালত এক আদেশে নাভালনির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠনকে ‘উগ্রবাদী’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেন।
আদালতের আদেশের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাঁর নেটওয়ার্কের আঞ্চলিক অফিস ও দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়েছে।
আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের এক মুখপাত্র আদালতের বাইরে বলেন, নাভালনির সংগঠনগুলো যে তথ্য প্রচার করে, তা সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও শত্রুতায় উসকানি দেয় বলে দেখা গেছে। শুধু তা-ই নয়, তারা উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডও পরিচালনা করে।
আদালতের এ আদেশের ফলে নাভালনির রাজনৈতিক সংগঠনের হয়ে কর্মীরা তাঁদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলে সাজা হিসেবে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। কেউ যদি প্রকাশ্যে নাভালনির রাজনৈতিক নেটওয়ার্ককে সমর্থন করেন, তাহলে তিনি দেশটির নির্বাচনে নিষিদ্ধ হতে পারেন।
আদালতের আদেশের পর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নাভালনি। তিনি পিছু হটবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, তাঁর সমর্থকদের এখন তাঁদের কাজের ধরন পরিবর্তন করতে হবে।
এদিকে নাভালনি আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তাঁরা এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
৪৪ বছর বয়সী নাভালনি রাশিয়ার একজন সুপরিচিত বিরোধী নেতা। তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। নাভালনি বর্তমানে রাশিয়ার কারাগারে আছেন।
ক্রেমলিনের হুমকি উপেক্ষা করে গত ১৭ জানুয়ারি জার্মানি থেকে দেশে ফেরেন নাভালনি। বিমানবন্দরেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। অর্থ আত্মসাতের পুরোনো একটি মামলায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে নাভালনিকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ দণ্ডকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন নাভালনি।
নাভালনিকে গত বছরের আগস্টে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সে সময় তিনি সাইবেরিয়ার টমসক শহর থেকে উড়োজাহাজে করে মস্কোয় ফিরছিলেন। যাত্রাপথে উড়োজাহাজেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজ সাইবেরিয়ার ওমস্কে জরুরি অবতরণ করে। সেখানকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য জার্মানির বার্লিনে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি ধীরে ধীরে সেরে ওঠেন।
বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভিত্তিতে গত সেপ্টেম্বরে জার্মানি জানায়, নাভালনিকে রাশিয়ান নার্ভ এজেন্ট ‘নোভিচক’ প্রয়োগ করা হয়েছিল। পরে অন্য দেশের বিশেষজ্ঞরাও একই কথা বলেন। বিষ প্রয়োগের জন্য সরাসরি পুতিনকে দায়ী করেন নাভালনি। তবে পুতিন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বানে ক্রেমলিন কর্ণপাত করেনি।