আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
স্কুল থেকে ফেরার পথে ২০১২ সালে তালেবানের গুলিতে বিদ্ধ হওয়া পাকিস্তানের নারী শিক্ষা অধিকারকর্মী এবং শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই আফগানিস্তানের মেয়েদের স্কুলে ফিরতে দেওয়ার জন্য আফগান নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গত আগস্টের মাঝের দিকে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসা কট্টরপন্থী ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান মেয়েদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ছেলেদের স্কুলে ফেরার অনুমতি দেয়। তালেবান দাবি করেছে, তারা ইসলামী বিধি-বিধানের ব্যাখ্যা অনুযায়ী নিরাপত্তা এবং শ্রেণি কক্ষে আলাদা বসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পরই কেবল মেয়েদের স্কুলে ফিরতে দেবে। যদিও তালেবানের এই দাবি নিয়ে অনেকের সন্দেহ আছে।
রোববার মালালা ইউসুফজাই এবং আফগান নারী অধিকার কর্মীদের লেখা এক খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘তালেবান কর্তৃপক্ষ… নারী শিক্ষার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং অবিলম্বে মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় পুনরায় চালু করুন।’
মেয়েদের স্কুলে যাওয়া থেকে বিরত রাখা ধর্ম সমর্থন করে না; সেটি তালেবানকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের এই মানবাধিকার কর্মী।
চিঠিতে লেখকরা বলেছেন, বিশ্বে এখন আফগানিস্তানই একমাত্র দেশ, যেখানে নারীশিক্ষা নিষিদ্ধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত আফগানিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান শাহারজাদ আকবরও ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।
লেখকরা আফগান শিশুদের একটি শিক্ষা পরিকল্পনার জন্য জরুরি তহবিল সহায়তা দিতে জি২০ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। চিঠির পাশাপাশি অনলাইনে একটি আবেদন চালু করেছেন তারা, যেখানে এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন।
নারী শিক্ষা অধিকার কর্মী মালালা ইউসুফজাই ২০১২ সালে পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় তেহরিক-ই-তালেবানের হামলার শিকার হন। ওই সময় স্কুল থেকে ফেরার পথে বাসে উঠে তালেবানের এক সদস্য মালালার মাথায় গুলি চালায়।
বর্তমানে ২৪ বছর বয়সী মালালা নারী শিক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ করছেন। তার অলাভজনক সংস্থা মালালা ফান্ডের মাধ্যমে লাখ লাখ ডলারের তহবিল গঠন করেছেন তিনি; যা সারা বিশ্বে মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে ব্যয় করা হয়। এই সংস্থা থেকে ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে ২ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে।
সূত্র: এএফপি।