নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বাস্থ্যখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এরমধ্যে নার্সিং শিক্ষায় পিএইচডি কোর্স চালুর বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নার্স শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে জাতির উদ্দেশে দেওয়া বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
বক্তৃতায় তিনি জানান, নার্সিং শিক্ষার উচ্চতর মান নিশ্চিত করতে বাজেটে নতুন একটি উদ্যোগ হিসেবে নার্সিংয়ে পিএইচডি কোর্স চালুর কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে নার্সদের আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ দিতে একটি ‘নার্স শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও প্রস্তাবনায় রয়েছে। এছাড়া বৈদেশিক চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে কেয়ারগিভার পেশায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নেওয়ার কথাও জানান তিনি। এতে শুধু বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়বে না, প্রবাস আয় বাড়িয়ে অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত খুলবে বলেও বাজেটে উল্লেখ করা হয়।
‘২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে’ অবকাঠামো উন্নয়ন, সেবার পরিধি বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগে জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতের শূন্য পদ পূরণে চিকিৎসক, সেবিকা, টেকনিশিয়ান, ফার্মাসিস্ট ও স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়োগ ত্বরান্বিত করা হয়েছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে অতিরিক্ত ৪ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, টিকাদান কর্মসূচির সম্প্রসারণে ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি দেশের শিশু ও মায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশে উন্নত চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে ৫০ শয্যার অধিক সব হাসপাতাল ও রেফারেল হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম আমদানিতে শুল্ক ও কর হ্রাসের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরো বলা হয়, হাসপাতালের বেড উৎপাদনে ব্যবহৃত খুচরা যন্ত্রাংশ এবং উপকরণের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি ২০৩০ সাল পর্যন্ত বহাল থাকবে। এই পদক্ষেপগুলো দেশীয় স্বাস্থ্যখাতকে আরও টেকসই ও জনমুখী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের বাজেটটি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর বাজেটের তুলনায় ভিন্ন।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।