অনলাইন ডেস্ক
মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্যোগে এবং কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির সহযোগিতায় নিউইয়র্ক কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘বাংলা কর্নার’ স্থাপন করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জানায়, মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্নারটির উদ্বোধন করেন। এ সময় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন সি. ল্যু, কুইন্স বোরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ডস এবং কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেনিস এম. ওয়ালকট উপস্থিত ছিলেন।
কনস্যুলেট জেনারেল জানায়, নিউইয়র্ক কুইন্স বোরো যেখানে ইংরেজি, স্প্যানিশ ও চাইনিজ ভাষার পরেই বাংলা চতুর্থ বৃহৎ ভাষা হিসেবে ব্যবহ্নত হয়। সে কারণে কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘বাংলা কর্নার’ উদ্বোধন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। ‘বাংলা কর্নার’টিতে সর্বমোট ৩০৯টি বই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। বইগুলো বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিষয়ে বাংলাদেশের প্রথিতযশা লেখক ও সাহিত্যিকদের লেখা। এছাড়াও বাংলাদেশের উপন্যাস, গল্প সমগ্রসহ শিশু-কিশোর উপজীব্য বইগুলো এ কর্নারে স্থান পেয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, ২০২১ সাল বিভিন্ন দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ বছর আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং আজ (মঙ্গলবার) প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন। এছাড়া এ বছর বাংলাদেশের আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি হলো বাংলাদেশ এ বছরই স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সব সূচকে সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে। সে কারণে এ বছরের এ দিনে ‘বাংলা কর্নার’ শুভ উদ্বোধন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
মোমেন বলেন, আমরাই একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মদের নিয়ে এই ‘বাংলা কর্নার’-এ আসবেন এবং বই পড়বেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ৩২টি ভাষণের সংকলণ ও বিশ্লেষণ এবং প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ৭৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির লেখনি সম্বলিত বিশেষ সংকলন কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিকে উপহার দেন।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, মুজিববর্ষে স্থাপিত এই ‘বাংলা কর্ণার’ আমাদের বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটির জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিসহ অন্যান্য মূলধারার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কনস্যুলেটের যোগাযোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা এবং কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেনিস এম. ওয়ালকট অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। কনসাল জেনারেল তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক জাতিসংঘে প্রথম বাংলায় ভাষণ প্রদান এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক বাংলা ভাষণকে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতির কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন সি. ল্যু এবং কুইন্স বোরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ডস এবং সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস। প্রত্যেকেই বাংলা ভাষাকে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি-আমেরিকানদের কাছে তুলে ধরার এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এর মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষি সবার বিশেষ করে শিশু কিশোরদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা তৈরি হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
বিএসডি/এমএম