আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আর কয়েক ঘণ্টা পর বিশ্ব থেকে বিদায় নেবে ২০২১, আগমন ঘটবে ২০২২ সালের। লকডাউন, করোনা বিধিনিষেধ, রাত্রিকালীন কারফিউ, আক্রান্ত, মৃত্যু- সব মিলেয়ে মহামারিতে বিপর্যস্ত এই বিপর্যস্ত এই বিশ্বে বিগত বছরসমূহের তুলনায় এ বছরের বর্ষবরণ স্বাভাবিকভাবেই বিষন্ন, নিরানন্দ।
কিন্তু এই ঘোর সংকটের সময়েও এগিয়ে যেতে হবে, জারি রাখতে হবে মহামারি অবসানের লড়াই। করোনা বিধিনিষেধের ঘেরাটপের মধ্যে নিউজিল্যান্ডবাসী তাদের নববর্ষ উদযাপণের মাধ্যমে যেন সেই বার্তাই পৌঁছে দিলেন বিশ্বকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই সাদামাটাভাবে রাজধানী ওয়েলিংটনসহ দেশটির ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে উদযাপন করা শুরু করেছেন নিউজিল্যান্ডবাসী। তবে দেশজুড়ে কোথাও নেই হইচই, জনসমাগম।
প্রতিবছর নববর্ষের সময়ে নিউজিল্যান্ডজুড়ে আতশবাজি পোড়ানো হয়। সবচেয়ে বেশি আতশবাজী পোড়ানো হয় দেশটির সর্বোচ্চ বহুতল ভবন স্কাই টাওয়ার থেকে।
তবে করোনার কারণে গতবারের মতো এবারও স্কাই টাওয়ারে আতশবাজি পোড়ানো হচ্ছে না। তবে স্কাই টাওয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘড়ির কাঁটা ১২ টার ঘর অতিক্রমের পর লেজার শোর আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়া পুরনো বছরের শেষ রাতে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে পানশালা বা নৈশক্লাবে যাওয়ার পরিকল্পনাও বাতিল করতে হচ্ছে নিউজিল্যান্ডবাসীকে। কঠোর করোনা বিধিনিষেধের কারণে সেই পরিকল্পনাও বাতিল করতে হচ্ছে তাদের।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘরের মধ্যে ছোটো পরিসরে লোকজন নববর্ষ উদযাপন করতে পারবেন।
২০২০ সালে মহামারি শুরুর পর ‘জিরো কোভিড’ নীতি নিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের সরকার। ২০২১ সালের শুরু পর্যন্ত কার্যকর ছিল সেই নীতি; ফলে, দীর্ঘ প্রায় এক বছর কঠোর করোনাবিধি ও সীমান্ত বিধিনিষেধ জারি ছিল দেশটিতে।
পরে অবশ্য বাস্তবতা ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে সরে আসে দেশটির সরকার। কিন্তু করোনা বিধিনিষেধ খুব একটা শিথিল হয়নি নিউজিল্যান্ডে। দেশটির অন্যতম প্রধান শহর অকল্যান্ড গত ১০৭ দিন ধরে লকডাউনে আছে।
অবশ্য এর সুফলও পাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বের যেসব দেশে করোনায় সংক্রমণ-মৃত্যু সবচেয়ে কম হয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম দেশটি। এমনকি, প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়া, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়েছে যে দেশটি, তার তুলনায়ও কম সংখ্যক সংক্রমণ-মৃত্যু দেখেছে নিউজিল্যান্ড।
মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হালনাগাদ হিসেব প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমির্টার্স অনুযায়ী, মহমারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত গত ২ বছরে নিউজিল্যান্ডে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ১৪ হাজার ১১৮ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৫১ জনের।
সংক্রমণ-মৃত্যু নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচীতেও বেশ সফল নিউজিল্যান্ড সরকার। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৯১ দশমিক ৮ শতাংশ করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন।
সূত্র: নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড
এসএ