নিজস্ব প্রতিবেদক
ন্যায্য পাওনা পেতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) সঙ্গে দেখা করতে নিরাপত্তাকর্মীদের বাধা উপেক্ষা করে টিসিবি ভবনে ঢুকে পড়েছেন ইভ্যালির গ্রাহকরা।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১ টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত টিসিবি ভবনের প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইভ্যালির প্রতারণার বিরুদ্ধে ও টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য গ্রাহকরা দুপুর ১২টার দিকে টিসিবি ভবনের সামনে গণঅভিযোগ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা ইভ্যালির মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবি উপস্থাপন শেষে বেলা ১টা ২০ মিনিটের দিকে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজির সঙ্গে দেখা করতে টিসিবি ভবনে প্রবেশ করতে চান। এ সময় টিসিবি ভবনের মূল ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের ভিতরে প্রবেশ করতে বাধা দেন। পরে এ বাধা উপেক্ষা করে নিরাপত্তা কর্মীদের ধাক্কা দিয়ে প্রায় ১০০ জনের মতো বিক্ষুব্ধ গ্রাহক টিসিবি ভবনের ভেতরে ঢুকে যান।
আরও দেখা যায়, ভবনের ভেতরে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা প্রবেশ করার পর পুলিশের তিন-চার জন সদস্য এসে তাদের বাধা দেন। পুলিশের সদস্যরা তাদের বলতে থাকেন ভবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অফিস রয়েছে। এত লোক ভবনের ভেতরে প্রবেশ করায় অফিসগুলোর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
তাই পুলিশ সদস্যরা তাদের অনুরোধ জানান, তাদের মধ্যে কয়েকজনের একটি দল যেন ভোক্তা অধিকারের ডিজির সঙ্গে দেখা করতে যান এবং তাদের দাবি জানান। পরে পুলিশের এই অনুরোধে আন্দোলনকারীরা রাজি হয়। এরপর টিসিবি ভবনের ভেতরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে আন্দোলনকারী ইভ্যালির গ্রাহক মো. ইমরান খান বলেন, ইভ্যালির রাসেল ও তার স্ত্রীর প্রতারণায় আজ আমরা সর্বস্বান্ত। আমাদের টাকাগুলো এখনও ফেরত দিচ্ছে না। সেই জন্য আমরা আজ আমাদের সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেছি। দাবি উপস্থাপন করার শেষে যখন আমরা ভোক্তা অধিকারের ডিজির সঙ্গে দেখা করতে টিসিবি ভবনে প্রবেশ করতে যায়, তখন নিরাপত্তাকর্মীরা আমাদের বাধা দেয় এবং আমাদের অনেককে ধাক্কা দিয়ে আহত করে। আমরা ভোক্তা অধিকারের ডিজির সঙ্গে দেখা করে আমাদের সাত দফা দাবি জানাতে চাই এবং আমাদের টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চাই।
এর আগে টিসিবি ভবনের সামনে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন। তারা এই সময় বলেন তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে তারা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।
তাদের দাবিগুলো হলো—
১) আগামী ৭ দিনের মধ্যে ইভ্যালির গেটওয়ের সম্পূর্ণ টাকা ছাড় করতে হবে।
২) ইভ্যালির এমডি মো.রাসেল এবং চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের পাসপোর্ট জব্দ করে, বিদেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হোক।
৩) আগামী ৭ দিনের মধ্যে যে গ্রাহকদের চেকের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের পুনরায় চেক প্রদান করতে হবে।
৪) যেসব গ্রাহক গেটওয়ের পূর্বের অর্ডারের কোনো চেক পায়নি, আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাদেরও চেক প্রদান করতে হবে।
৫) ইভ্যালির চেকপ্রাপ্ত এবং যারা চেক পায়নি তাদের সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করে, আগামী ২২ কর্মদিবসের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে হবে।
৬) উপরোক্ত দাবিগুলা না মেনে রিফান্ড দিতে ব্যর্থ হলে তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে গ্রাহকদের মাঝে রিফান্ড বণ্টন করে তাকে আইনের আওতায় আনা হোক।
৭) ইভ্যালির রিফান্ড কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পেছনে মো. রাসেলকে যারা সাহায্য করছে তাদেরর তদন্তের ভিত্তিতে, আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।