মাঝরাত থেকে ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্তের পরেও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে দক্ষিণবঙ্গের ঘরমুখী যাত্রীদের ঢল নেমেছে। শনিবার (৮ মে) ভোর থেকে বিভিন্ন যানবাহনে করে ঘাট এলাকায় জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার মানুষ। যাত্রীর চাপে হিমশিম খেতে হচ্ছে ঘাট কর্তৃপক্ষকে। এ অবস্থায় শিমুলিয়া ঘাট থেকে একটি ফেরি মাদারীপুরের শিবচর অভিমুখে ছাড়তে দেখা গেছে।
তবে সকাল থেকে ঘাট এলাকায় কোনো যানবাহন ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ। ফলে কয়েক কিলোমিটার হেঁটেই ঘাটে যাচ্ছেন যাত্রীরা। ফেরি বন্ধ থাকার খবর শুনে নিরুপায় হয়ে ঘাটে অপেক্ষা করছেন কেউ কেউ। অনেকে আবার ফিরছেন রাজধানীর পথে।
এক যাত্রী বলেন, হঠাৎ করে ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্তে অনেক মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। আমরা অনেক ভোগান্তি করে, ১০০ টাকার ভাড়া ৩০০ টাকা দিয়ে ঘাটে এসেছি। এখন আবার ফিরে যাচ্ছি।
আরেক যাত্রী বলেন, সেহরির সময় নাকি ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা যদি সন্ধ্যার সময় বলত তাহলে এতগুলো মানুষ তো আসত না। এখন কিছু করার নেই। ফিরে যাচ্ছি।
বিষয়টিকে ভোগান্তি বলে উল্লেখ করেছেন অনেক যাত্রী। কথা বলে জানা গেছে, হঠাৎ করে ফেরি বন্ধের এই সিদ্ধান্তের কথা তারা আগে থেকে জানতেন না।
এরই মধ্যে সকাল ৯টার দিকে কয়েক হাজার যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ‘কুঞ্জলতা’ নামে একট ফেরি বাংলাবাজার ঘাটে যেতে দেখা গেছে। ফেরিটিতে যাত্রী ছিলো চোখে পড়ার মতো। যথারীতি সেখানে উপেক্ষিত হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি।
এ বিষয়ে শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি সম্পর্কে তিনি জানেন বলে জানান।
বিআইডব্লিউটিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মিশা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দিনের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে, রাতে পণ্যবাহী যান পারাপারের জন্য ফেরি চলবে। কিন্তু আজ সকালে শিমুলিয়ায় এত মানুষ ভিড় করেছে যে, বাধ্য হয়ে একটি ফেরি ছাড়তে হয়েছে। এ পরিস্থিতির বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয়কে এবং আমাদের প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে জানানো হয়েছে। আমরা পরবর্তী নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।
শুক্রবার সকাল থেকেই বাংলাবাজার ফেরিঘাটে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীদের চাপ শুরু হয়। এদিন নৌরুটে মোট ১৪টি ফেরি চলাচল করে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ফেরিগুলোতে খুব সংখ্যক গাড়িই উঠতে পেরেছে। প্রতিটি ফেরিতেই ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়।
এ পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে শনিবার (৮ মে) থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, শিমুলিয়া-বাংলাবাজারসহ দেশের সব ফেরিঘাট থেকে দিনের বেলায় সব ধরনের ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। শুধুমাত্র রাতের বেলায় পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলবে।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে এবার যার যার কর্মক্ষেত্রেই ঈদ করার জন্য বলেছে সরকার। বন্ধ রাখা হয়েছে আন্তঃজেলা বাস এবং লঞ্চ চলাচল।