নিজস্ব প্রতিবেদক:
এক সময়েয় সকলের চিরচেনা পলাশ গাছ ও পলাশ ফুল এখন আর আগের মত চোখে পড়েনা। বর্তমানে নীলফামারীর গ্রামীণ জনপদে পলাশ গাছ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে দেখা মিলেছে দুষ্প্রাপ্র পলাশ ফুল। এ জেলা থেকে পলাশ গাছ ধীরে ধীরে উধাও হয়ে যাচ্ছে। এখন আর সহজে দেখা মেলে না অরণ্যের অগ্নিশিখা পলাশ ফুলের। কালেভাদ্রে এ ফুলের দেখা মেলে কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের বাড়িমধুপুর ফুলবাড়ির ডাঙ্গার ফসলি জমির সীমানায়।
বর্তমানে শীতের রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রকৃতিতে এখন ফাল্গুন মাস। পত্র-পল্লবে সেজে উঠেছে ঋতুরাজ বসন্ত। ঋতুরাজ বসন্তকে ঘিরে দখিনা হাওয়ায় অগ্নিশিখার কমলা রঙের পাপড়িতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে পলাশ ফুল। পুষ্পমঞ্জুরিতে মধু আহরণে মৌমাছির গুনগুন গুঞ্জন আর ফুলে-ফুলে রেনু খেতে পাখ-পাখালির ভিড় আর খুনসুঠিতে মাতিয়ে তুলছে সেখানকার প্রকৃতি। যেন কমলা রঙের শাড়িতে ঘোমটাপরা নববধু’র সাজে সেজেছে পলাশ ফুল। এমন আবরণে এক রৌদ্রজ্জ্বল আবেশ ঘন পরিবেশ যেন প্রকৃতি প্রেমীদের হ্নদয়ে দোল দিয়ে যাচ্ছে।
পানিয়াল পুকুর গ্রামের বেলাল হোসেন জানান, এক সময় আমার জমির সীমানা (আইলে) সারি-সারি পলাশের গাছ ছিল। বসন্তের প্রতীক সৌন্দর্য হিসেবে একটি পলাশ গাছ রেখে দিয়েছি। তাছাড়াও এক সময় গ্রামান্তরের মেঠোপথ বন-জঙ্গলের দিকে তাকালেই দেখা মিলত চির পরিচিত পলাশ ফুলের। কিন্তু জনবসতি বেড়ে যাওয়ায় উজাড় হচ্ছে বন-জঙ্গল আর নতুন করে গাছ লাগানো হচ্ছে না এবং সংরক্ষণের অভাবে এ ফুলের গাছ বিলুপ্ত প্রায়। অযত্ন-অবহেলায় পথ-প্রান্তরে বেড়ে উঠা পলাশ ফুলের গাছ খুঁজে পাওয়া এখন দুষ্কর ব্যাপার।
এখন নতুন প্রজন্মকে এ ফুলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে খুঁজতে হবে বইয়ের পাতায়।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক সুধীর চন্দ্র জানান, পলাশ গাছের আছে বহুবিধ ঔষধি গুণ। এ গাছের পাতা শক্তি বৃদ্ধিসহ ব্রণ, ঘামাচি, পেটের ব্যাথা, অর্শরোগ ও ফোড়া সারাতে গ্রামঞ্চলের মানুষ ব্যবহার করতো এ গাছ এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার আজিজার রহমান বলেন, পলাশ মাঝারি আকারের পর্ণমোচি বৃক্ষ। পলাশের আর এক নাম কিংশুক। শীতে গাছের পাতা ঝরে যায়। এর বাকল ধূসর। শাখা-প্রশাখা ও কাণ্ড আঁকাবাকাঁ। নতুন পাতা রেশমের মত সুক্ষ্ম। গাড় সবুজ পাতা ত্রিপত্রি, দেখতে অনেকটা মান্দার গাছের মত হলেও আকারে বড়।
বিএসডি/ এলএল