স্পোর্টস ডেস্ক
দলবদল নিয়ে আগেও বেশ কয়েক বছর আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার জুনিয়র। যদিও সেই সময় ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে, তীক্ষ্ণ নজর ছিল ইউরোপের সব জায়ান্ট ক্লাবের। কিন্তু ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় নেইমারের ক্লাব হতে পারে তার শৈশব কাটানো সান্তোস। এর আগে ২০২৩ সালে তিনি যখন পিএসজি ছাড়ছিলেন, তখন সাবেক ক্লাব বার্সেলোনায় ফেরারও গুঞ্জন ছিল। সেই দরজা কী এখনও খোলা আছে? ওই প্রসঙ্গই উঠে এসেছে ক্লাবটির এক কর্মকর্তার মুখে।
নেইমার সৌদি আরবের ক্লাব আল-হিলাল ছাড়লে পরবর্তী গন্তব্য কোথায় হতে পারে তা নিয়ে কথা বলেছেন বার্সার স্পোর্টিং ডিরেক্টর অ্যান্ডারসন লুইস ডি সুজা। যদিও তাকে ফুটবলবিশ্ব চেনে ‘ডেকো’ নামে। নেইমারের যে বার্সেলোনায় ফেরা সম্ভব নয় সেটি অনুমান করা খুব কঠিন হওয়ার কথা নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের আর্থিক সংকট ও ফেয়ার-প্লের নিয়মের বেড়াজালে আটকে থাকার বিষয় বারবার খবরের শিরোনামে এসেছে।
আগামী জুন শেষে আল-হিলালের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ফুরোলেও, তার আগেই নেইমারের ঠিকানা বদলের জোর গুঞ্জন চলছে। সেই আলোচনা অবশ্য হুট করে আসেনি। চোটজর্জর এই তারকাকে রাখতে চায় না স্বয়ং আল-হিলালও। এ ছাড়া নেইমারও চুক্তির মেয়াদ ফুরোনোর আগেই ক্লাব ছাড়তে চান, তবে তাকে দিতে হবে চুক্তির পুরো টাকা। আর এই বিষয়টিই তার দ্রুত ক্লাব ছাড়ার ক্ষেত্রে দেয়াল হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে সংবাদসংস্থা এএফপি’র এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।
এদিকে, নেইমারের পরবর্তী গন্তব্য প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যম ‘টিএনটি স্পোর্টস ব্রাজিলের’ সঙ্গে কথা বলেছেন বার্সার স্পোর্টিং ডিরেক্টর। ডেকো জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘদিন আগেই নেইমারের বার্সায় ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি যখন সৌদি আরবে পাড়ি দিচ্ছেন, তখনই আমরা জানতাম তিনি খুবই ব্যয়বহুল খেলোয়াড়। বিশেষ করে ফাইনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র নিয়ম এক্ষেত্রে বেশ কঠিন।’
নেইমার আল-হিলালে থাকবেন নাকি অন্য কোথাও ঠিকানা বদলাবেন, এই বিষয়ের চেয়ে তার সন্তুষ্ট থাকাই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন ডেকো। বার্সা কর্মকর্তা বলছেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নেইমার খেলায় ফিরছে। আর এটাই সে এবং অন্যদের জন্য আনন্দের উপলক্ষ্য। সত্যি বলতে আমি জানি না সে কী করবে, কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তার খুশি থাকা।’
প্রথমে শোনা গিয়েছিল, সাবেক সতীর্থ লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজদের সঙ্গে ইন্টার মায়ামিতে দেখা যেতে পারে ব্রাজিল ফরোয়ার্ডকে। তবে সেখানে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) জটিল আর্থিক নীতিমালা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মায়ামির নতুন কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানোও এককথায় জানিয়ে দেন, ওই কারণে মেসি-সুয়ারেজের সঙ্গে নেইমারের পুনর্মিলন ঘটা সম্ভব নয়। যদিও এমএলএসের একাধিক ক্লাবও নেইমারকে পেতে লড়াইয়ে নেমেছে বলে বেরিয়েছে নতুন খবর।
অন্যদিকে, ব্রাজিল তারকাকে পেতে মরিয়া তার শৈশবের ক্লাব সান্তোস। নেইমার নিজেও ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে পুরোনো ঠিকানায় নাম লেখানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তার সান্তোসেই যাওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রাজিলের গণমাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, ‘আল-হিলাল নেইমারকে বলে দিয়েছে তারা সৌদি প্রো লিগের জন্য তাকে নিবন্ধিত করবে না। আর সান্তোসও নেইমারের ফেরার বিষয়ে খুবই আশাবাদী। এই সপ্তাহের মধ্যে আল হিলালের সঙ্গে তার চুক্তি বাতিল হতে পারে। চুক্তি বাতিলের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন হলেও, ব্যাপারটি সহজ নয়। একটি আর্থিক চুক্তি করতে হবে, কারণ আল-হিলালের কাছে এখনও সাড়ে ৬ কোটি ডলার পাওনা নেইমারের, যেটা তিনি ছাড়তে চাচ্ছেন না। যদিও তিনি ক্লাব ছাড়তে চান।’