নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, একটা মর্যাদাভিত্তিক, ন্যায়ভিত্তিক ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য একটা আকাঙ্ক্ষা আমাদের আছে। সারা দেশের মানুষের আছে। সেটার জন্য আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করবো।
আজ (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ নাসিব হাসান রিয়ান স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট অর্থাৎ ৩৬ জুলাই আমরা একটা ভিডিও করে বের হয়েছিলাম, ভিডিওতে আমি বলেছিলাম যে, আজকে যদি কোনো গণহত্যা হয় বা ম্যাসাকার হয়, তাহলে আমাদের সশস্ত্র সংগ্রামের আহ্বান থাকবে। আমরা ফিরে নাও আসতে পারি, আপনারা লড়াই চালিয়ে যাবেন। একটা ভিডিও করে আমি কিছু সাংবাদিককে দিয়ে এসেছিলাম। যদি আজকে আমি না ফিরি, আজ আমাদের বিজয় অর্জন না হয়, তাহলে এটাই আমাদের শেষ বার্তা। আমরা প্রত্যেকেই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম এবং এখনও আছি।
‘ওই সময় সবাই শহীদ হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। নাসিব ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে রাস্তায় নেমেছিল, বাসায় বলে নেমেছে যে, আজকে আমার মৃত্যু হতে পারে। যারা আমরা মাঠে ছিলাম এটা আমাদের প্রত্যেকের বাস্তবতা ছিল।’
অবহেলার কারণে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও তাদের পরিবারের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমি হাসপাতালে গিয়েছি, অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে তাদের এখন অনেকে বলছে, আন্দোলনে কেন গিয়েছিলে, গিয়েছ বলে এই অবস্থা। আমি জানি না কোন ধরনের অমানবিক মানুষ এই কথাগুলো বলতে পারে। তারা আন্দোলনে গিয়েছিল বলে আজ আমরা এখানে বসে কথা বলতে পারছি।
তিনি বলেন, হ্যাঁ, এ সরকারের প্রতি অনেক প্রত্যাশা, সরকার হয়তো সব প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। আড়াই মাস, তিন মাসে সবাই সরকারের ওপর দাবি-দাওয়া চাপিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু আমরা যে ১৬ বছরের স্বৈরতন্ত্র থেকে, ফ্যাসিজম থেকে মুক্তি পেয়েছি এবং সম্ভাবনার কথা বলতে পারছি- এটাই তো আমাদের জন্য একটা বড় অর্জন। এটা সম্ভব হয়েছে এই মানুষগুলো রাস্তায় নেমেছিল বলে। গুলির সামনে তাদের বুক পেতে দিয়েছিল বলে।
শহীদদের পরিবার এবং আহতদের প্রতি আমাদের সমবেদনাটা, কৃতজ্ঞতাটা যেন সব সময় থাকে সে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনে এমনকি অনেক আওয়ামী পরিবারের সন্তানেরা অংশগ্রহণ করেছে। তাই এই আন্দোলনে অনেক ধরনের ডাইমেনশন আছে। হয়তো আমরা এখনও সেগুলো আবিষ্কার করতে পারিনি।
‘অনেক ইস্যুতে হয়তো অনেক কিছু চলে আসে আমরা ভুলে যাই.. অনেক কিছু। সরকার, বাংলাদেশকে ঠিক মতো চলতে হলে সেই স্মৃতিগুলোকে আমাদের বারবার দেখতে হবে, আমাদের নিজেদের সেই বিবেকের সামনে দাঁড় হতে হবে, এই মানুষগুলোর রক্তের ওপর দিয়ে আমরা সরকারে আসছি। আমরা যাতে কোনো ভুল না করি, কোনো অন্যায়ের পথে না যাই।’
সরকারি কর্মকর্তাদের আহত-নিহতের পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলার, সাহায্য-সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান নাহিদ ইসলাম।