আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পদত্যাগ করেছেন আফগানিস্তান বিষয়ক শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক জালমে খলিলজাদ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে করা প্রতিবেদনে তথ্যটি জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত শুক্রবার নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন খলিলজাদ।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) বিবৃতির মাধ্যমে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন, এখন থেকে আফগানিস্তানে মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করবেন টম ওয়েস্ট। এতদিন তিনি খলিলজাদের সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে কাতারের দোহায় কট্টর ইসলামিক সংগঠন তালেবান বাহিনীর সঙ্গে মার্কিন সরকারের যে চুক্তি হয়েছিল, সেই অনুযায়ী কাবুল বিষয়ক নীতি নির্ধারণ করবে ওয়াশিংটন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও মার্কিন সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করা আফগান নাগরিকদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রায় দুইমাস পর চলতি অক্টোবর মাসে দোহায় তালেবান প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাইডেন প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।
গুরুত্বপূর্ণ সেই বৈঠকের মাত্র দুই সপ্তাহের মাথাতেই পদত্যাগ করেছেন খলিলজাদ। এ সম্পর্ক মন্তব্য চেয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, যদিও বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
বিশ্লেষকদের মতে, ৭০ বছর বয়সী জালমে খলিলজাদের জন্ম আফগানিস্তানে। আর তার শৈশব-কৈশর কেটেছে কাবুলে। অভিজ্ঞ ও ঝানু এই কূটনীতিক সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান বিষয়ক শীর্ষ কূটনীতিকের পদে আসীন হন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দোহায় তালেবান নেতাদের সঙ্গে মার্কিন সরকারের যে চুক্তি হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন খলিলজাদ।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার এই ঘোষণা দেওয়ার মাত্র তিন মাসের মাথায় আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের সবগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবান বাহিনী।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন যুদ্ধ ছিল আফগানিস্তানের সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ। যদিও দুই দশকের এই যুদ্ধের সমাপ্তি যখন মার্কিন প্রশাসন ঘোষণা করল, তার অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে তালেবান বাহিনীর এই সাফল্যকে যুক্তরাষ্ট্রের এযাবতকালের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক পরাজয় হিসেবে দেখেছে বিশ্ববাসী। আর তার জন্য অনেকাংশে দায়ী জালমে খলিলজাদ।
বিএসডি / এসএফ