আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলকে ছাড় দিয়ে পশ্চিমারা ইতোমধ্যেই তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ।
গাজা ভূখণ্ড নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাম্প্রতিক মন্তব্যের জবাবে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ এই দূত একথা বলেন।
রোববার (১ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সম্প্রতি বলেছেন, “আমরা যদি গাজাকে পরিত্যাগ করি … তাহলে আমরা বিশ্বের অন্যান্য অংশে আমাদের নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই ধ্বংস করব”। ম্যাক্রোঁর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ বলেন, পশ্চিমারা ইসরায়েলকে ছাড় দিয়ে ইতোমধ্যেই তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে তিনি লেখেন, “দুঃখজনক হলেও সত্য, এটা আগেই হয়ে গেছে। বহু দশক ধরে ইসরায়েলকে অবাধ ছাড় দেওয়ার মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্ব তার বিশ্বাসযোগ্যতা বিসর্জন দিয়েছে।”
তিনি আরও লেখেন, “পশ্চিমা দুনিয়ার বহু মানুষ, যারা ‘স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব’-এর মতো আদর্শকে সর্বজনীন মনে করে, আজ তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত। এখন একটাই পথ খোলা আছে, আর তা হচ্ছে— ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানো।”
আনাদোলু বলছে, গাজা ভূখণ্ড নিয়ে ম্যাক্রোঁ ওই মন্তব্য করেছিলেন সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ প্রতিরক্ষা সম্মেলন ‘শাংরি-লা ডায়ালগ’-এ। সেখানে তিনি বলেন, “যদি আমরা ইসরায়েলকে পূর্ণ ছাড় দিয়ে দিই — এমনকি যদি আমরা হামাসের সন্ত্রাসী হামলাকে নিন্দা করি — তাহলেও আমাদের বিশ্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা শেষ হয়ে যাবে।”
তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি, জরুরি মানবিক সহায়তা এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির গুরুত্বও তুলে ধরেন।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস কালামার্ড প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, “ম্যাক্রোঁ বলছেন— ইউক্রেন ও গাজার যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমারা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারে? সত্যিই? সেই বিশ্বাসযোগ্যতা তো ১৯ মাস আগেই হারিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় পশ্চিমাদের যোগসাজশ বা নিষ্ক্রিয়তার ফলেই তাদের এই বিশ্বাসযোগ্যতা ধ্বংস হয়েছে। আর এটা শুধুমাত্র কথাবার্তা দিয়ে ফেরানো যাবে না।”