আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য বেলুচিস্তানের হারনাই জেলায় সড়কে পেতে রাখা শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণে ১১ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৬ জন কয়লা শ্রমিক। শুক্রবার ভোরে ঘটেছে এই ঘটনা।
পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরিত বোমাটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা (আইইডি) ধরনের। যে এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেটি হারনাইয়ের একটি কয়লা খনির কাছে ঘটেছে এই বিস্ফোরণ। আধাসামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন শুক্রবার ভোরের দিকে কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক খনি এলকা থেকে শহরের দিকে রওনা দেয়। মোট ১৭ জন শ্রমিক তখন ট্রাকে ছিলেন।
সড়কের যে স্থানে বোমাটি পেতে রাখা হয়েছিল, সেখানে ট্রাকটি আসতেই ঘটে বিস্ফোরণ।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতির বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।”
ইসলামাবাদে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দফতর বলেছে, খনি শ্রমিকদের মৃত্যুতে তিনি শোক প্রকাশ করে বলেছেন “সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে তার সরকার।”
ভৌগলিক আয়তনের দিক থেকে বেলুচিস্তান পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজ্য। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু হয়েছে খনিজ সম্পদে ভরপুর এই রাজ্যটিতে। শু
শুক্রবারের বোমা বিস্ফোরণের দায় কেউ তাৎক্ষণিকভাবে নেয়নি। বালুচ জঙ্গিরা এখানে সরকারি ও বেসরকারি খনিজ সম্পদ উত্তোলন প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা বাহিনী ও কর্মীদের উপর প্রায়শই হামলা চালায়।
পরে বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ), বিশেষ করে মজিদ ব্রিগেড নামে পরিচিত তাদের আত্মঘাতী বোমারু বিভাগ বালুচিস্তানে সাম্প্রতিক প্রায় সকল হামলার দায় স্বীকার করেছে; এই হামলার ফলে বহু বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে।
৩১ জানুয়ারি পাকিস্তানের আধা-সামরিক বাহিনীর অন্তত ১৮ জন সৈন্যকে হত্যা করা হয়; এই প্রদেশের কালাত জেলায় এ দিন সৈন্যদের বাসের উপর হামলা চালায় বিএলএ জঙ্গিরা। গত কয়েক মাসে নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য এটা ছিল অন্যতম ভয়াবহ দিন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত তাদের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসজনিত হুমকির মূল্যায়ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বালুচিস্তানে “কয়েকটি ব্যাপক প্রাণঘাতি হামলা”র পিছনে রয়েছে বিএলএ।
সূত্র : আলজাজিরা, ভয়েস অব আমেরিকা