নিজস্ব প্রতিবেদক
বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরত আনা এবং ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তঃসংস্থা টাস্কফোর্স পুনর্গঠন করেছে সরকার।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এবার টাস্কফোর্সকে নতুন করে সাজানো হয়েছে এবং প্রথমবারের মতো এ টাস্কফোর্সের সভাপতি করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে।
পুনর্গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্য কমিয়ে সভাপতিসহ ৯ জন করা হয়েছে। এতদিন টাস্কফোর্সের জন্য আহ্বায়ক কমিটি ছিল, যার আহ্বায়ক ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। আর কমিটি ছিল ১৪ সদস্যের।
পুনর্গঠিত টাস্কফোর্সে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ; আইন ও বিচার বিভাগ; দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক); পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি); অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়; জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে একজন করে উপযুক্ত প্রতিনিধি থাকবেন। উপযুক্ত প্রতিনিধি বলতে কী বোঝানো হয়েছে, অর্থাৎ কোনো সদস্য কোন পর্যায়ের কর্মকর্তার নিচে হবেন না, প্রজ্ঞাপনে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
নতুন টাস্কফোর্স থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব, এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালককে (বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ)।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে, আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবদুস সোবহান ওরফে গোলাপ যুক্তরাষ্ট্রে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বেলজিয়ামে এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম কানাডায় অর্থ পাচার করেছেন বলে দুদক তদন্ত করছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ও কিছু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
নতুন প্রজ্ঞাপনে বাড়ানো হয়েছে টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি। এত দিন কার্যপরিধিতে তিনটি বিষয় থাকলেও এবার করা হয়েছে ছয়টি। এগুলো হলো বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ বা সম্পদ চিহ্নিত করা; পাচার করা সম্পদ উদ্ধারে হওয়া মামলাগুলোর কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করা ও তা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া; বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া; জব্দ বা উদ্ধার সম্পদের ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্যোগ নেওয়া; এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশ, বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ও তথ্য আহরণ করা এবং পাচার করা সম্পদ উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ সমন্বয় সাধন।