আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সশস্ত্র সংগঠন তালেবান বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা আফগানিস্তানের পাঞ্জশির উপত্যকার একটি অংশে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে। তালেবান বাহিনী পাঞ্জশির উপত্যকা দখলের মাধ্যমে গোটা দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে ঘোষণা দেওয়ার পরদিনই ফের অঞ্চলটিতে যুদ্ধের খবর পাওয়া গেল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানিয়েছে, উপত্যকাবাসীর নেতা আমরুল্লাহ ছালে তালেবান বাহিনীর উপত্যকা দখলের দাবিকে পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। তিনি তালেবান নেতাদের দাবিটিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন। যদিও তার মতে, তালেবান যদি ইন্টারনেট, ফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তবে পরিস্থিতি অনেক কঠিন হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সরকার গঠনের চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে অঞ্চলটিতে যুদ্ধ করছে তালেবান। পাঞ্জশির উপত্যকা রাজধানী কাবুলের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত। এটি আফগানিস্তানের ছোট একটি প্রদেশ এবং সেখানকার জনগণ তালেবানের কর্তৃত্ব মেনে নেয়নি। প্রদেশটিতে বর্তমানে দেড় থেকে দুই লাখ মানুষ বসবাস করছেন। মূলত তাদের আগলে রেখেছে বৃহৎ বৃহৎ পর্বত।
এ দিকে পাঞ্জশির উপত্যকায় তালেবান বাহিনীকে প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয়দের নেতা আহমদ মাসুদ। তিনি এক সময় আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও ছিলেন।
আফগানিস্তান সরকারের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ ছালেহ একটি ভিডিয়ো বার্তায় বিবিসি নিউজকে বলেছেন, এবার উভয় পক্ষেই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কোনো সন্দেহ নেই যে আমরা একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। তালেবান পরিকল্পিতভাবে আমাদের আক্রমণ করেছে। যদিও আমাদের বাহিনী কখনোই তাদের কাছে নতিস্বীকার করবে না। পাঞ্জশিরের দখল ইস্যুতে বর্তমানে তালেবান গুজব ছড়াচ্ছে।
অপর দিকে তালেবানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যোদ্ধাদের বাতাসে গুলি বর্জন করা উচিৎ এবং সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন।
এর আগে শুক্রবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছিল, পাঞ্জশির উপত্যকা দখলের দাবি জানিয়ে রাজধানী কাবুলের আকাশে বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়ে জয় উদযাপন করে তালেবান। বাহিনীটির এক কমান্ডার জানান, পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতে। পাঞ্জশিরের বিদ্রোহী বাহিনী পরাজিত হয়েছে এবং উপত্যকাটি তাদের দখলে চলে এসেছে।
গেল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকেই পাঞ্জশিরে তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে ন্যাশনাল রেসিস্ট্যান্স ফোর্সের (এনআরএফ) একের পর এক সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছিল। বর্তমানে তালেবানবিরোধী আঞ্চলিক মিলিশিয়া ও সাবেক সেনাবাহিনীর অনেকেই এনআরএফের সঙ্গে জড়ো হয়েছেন।
বিএসডি/এমএম