নিজস্ব প্রতিবেদক
কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, পারস্পরিক সহযোগিতা বিমসটেক অঞ্চলের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুতে বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর কৃষি বিষয়ক মন্ত্রীদের অংশগ্রহণে তৃতীয় বিমসটেক কৃষি বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
নেপালের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রামনাথ অধিকারীর সভাপতিত্বে সভায় সদস্য দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা যুক্ত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নে দুই দশকেরও অধিক সময় ধরে বিমসটেক কাজ করছে। সংস্থাটি স্থাপনের উদ্দেশ্য পূরণে কাজ করতে বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ। এ অঞ্চলে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের একসঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি, পশু ও মৎস্য সম্পদ কেবল অর্থনৈতিক খাতই নয় বরং এগুলো এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা, জীবনধারণ ও গ্রামীণ উন্নয়নের মূল স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। কৃষি এ অঞ্চলের কোটি কোটি জনগণের উন্নতিতে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু এ খাত জলবায়ু পরিবর্তন, অসম বণ্টন, বাণিজ্য ঘাটতিসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে উপদেষ্টা পারস্পরিক সমন্বয়, টেকসই সহযোগিতা ও গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উপদেষ্টা বঙ্গোপসাগরকে বিমসটেক অঞ্চলের মৎস্য সম্পদের অন্যতম উৎস হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এ অঞ্চল কোটি লোকের বেঁচে থাকা, অর্থনীতি ও প্রোটিন চাহিদার জোগান দেয়। বাংলাদেশসহ সদস্যদেশ সমূহ মৎস্য উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছে। দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন এ অঞ্চলের মৎস্য উৎপাদনে ক্ষতিকর প্রভাব রাখছে। এ বিষয়ে এক সঙ্গে কাজ করার জন্য উপদেষ্টা সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে আহ্বান জানান।
বিমসটেক অঞ্চলে ১৮০ কোটি লোকের বসবাস উল্লেখ করে কৃষি উপদেষ্টা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানাবিধ কারণে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে। বিমসটেকের মহাসচিব প্রস্তাবিত নীতি অনুযায়ী সমষ্টিগত আত্ন-নির্ভরশীলতার মাধ্যমে একটি বিমসটেক খাদ্য রিজার্ভ তৈরিতে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সমন্বয় জোড়ালো করতে উপদেষ্টা অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সামনে থেকে কাজ করতে প্রস্তুত।
জলবায়ু পরিবর্তনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি ও জীববৈচিত্র্যে ক্ষতি হচ্ছে পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়ছে। এ সংকট মোকাবিলায় গবেষণা ও উদ্ভাবনে আমাদের বিনিয়োগ ও সহযোগিতা বাড়িয়ে অভিযোজন করতে হবে। এ বিষয়ে একটি স্থায়ী গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত বলেও জানান উপদেষ্টা।