নিজস্ব প্রতিবেদক:
শরতের প্রস্থানের পরই হিমবায়ুর পালকি চড়ে হালকা কুয়াশার আঁচল টেনে আগমন হয়েছে সুমঙ্গলা হেমন্তের। হেমন্ত তার রূপ ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতিতে। দুপুরের পর বিকেলে স্বর্ণোজ্জ্বল রৌদ্রের আলোর সঙ্গে দর্শনাথীদের কোলাহল নেমে আসতেই গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে শুরু হয় সুনসান নিস্তব্ধতা।
সেই নিস্তবদ্ধতা ভেঙে পার্কটির কুমির বেষ্টনীর পাশের গাছগুলোতে শুরু পাখির কোলাহল। ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসে বিভিন্ন জাতের পাখি। এ যেন এক পাখির স্বর্গরাজ্য। বিদেশি প্রাণী ও পাখির টানে পার্কে আসা দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে প্রাকৃতিক পরিবেশে আসা এ পাখিগুলো।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন, বাইরের পরিবেশ পাখিরা নিরাপদ মনে করছে না, সেখানে পাখি শিকারিসহ নানা পেশার মানুষ পাখিদের বিরক্ত করছে। পার্কের কুমির বেষ্টনী ঘিরে তৈরি হয়েছে পাখি কলোনি, পাখিদের জীবন ও জীবিকার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে দেওয়ায় এখানে পাখিরা আসছে। এখানে তাদের কেউ বিরক্ত করছে না। আহারের ব্যবস্থা স্বরূপ পার্কের বিভিন্ন লেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে মাছ, পাশাপাশি পার্কে রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতিক গাছ।
তিনি আরও বলেন, পার্কে নানা জাতের রং-বেরঙের হাজারো দেশি-বিদেশি পাখির মেলা বসে। সকালে খাবারের উদ্দেশ্যে তারা দূর-দূরান্তে চলে যায়; দিন শেষে ভরপেটে তাদের যেমন চিৎকার চেঁচামেচিতে পার্কটির পরিবেশ ভারী করে। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে আবাবিল, মুনিয়া, টিয়া, খঞ্জনা, সাদা খঞ্জনা, কালো খঞ্জনা, পানকৌড়ি, কাঠশালিক, ইন্ডিয়ান পন্ড হিরণ, বিভিন্ন জাতের ঘুঘু, চাইন পন্ড হিরণ, ভাতশালিক, ঝুটি শালিক, বক, বিভিন্ন প্রজাতির মাছরাঙা, হট্টিটি, হরিয়াল ও নীলকন্ঠি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পাখি গবেষক আ ন ম আমিনুর রহমান বলেন, সাফারি পার্কে পাখি কলোনি তৈরি হয়েছে এটা অবশ্যই ভালো সংবাদ। ফুল, প্রজাপতি ও পাখিকে বলা হয় বলা হয় প্রকৃতির অলঙ্কার। সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে মূলত নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় তারা আসছে। এখানে বিনোদনপ্রেমীদের পাখি দর্শনেরও সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বিএসডি /আইপি