আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চলতি মাসের শেষের দিকে সাধারণ নির্বাচনের আয়োজনের লক্ষ্যে জাপানের পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন তিনি।
দেশটির বর্তমান বিরোধীদের জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে। যে কারণে করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে বিরোধীদের তুলনায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে ফুমিও কিশিদাই এগিয়ে আছেন।
গত ৪ অক্টোবর জাপানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ফুমিও কিশিদা। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১১ দিনের মাথায় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে দিয়েছেন তিনি। দেশটিতে আগামী ৩১ অক্টোবর সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। জাপানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে মোট আসনসংখ্যা ৪৬৫। কোনও দল বা জোটকে সরকার গঠন করতে হলে অর্ধেকের বেশি আসনে জয় পেতে হয়।
জাপানের এই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন রয়েছে। বেশ কিছু জরিপে দেখা যায়, দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষে কিশিদোর রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) এবং তাদের জোটসঙ্গী কোমিতো পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে।
টোকিওতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কিশিদো বলেন, আমরা কী করার চেষ্টা করছি এবং আমাদের লক্ষ্য কী; সে বিষয়ে জনগণকে জানাতে আমি এই নির্বাচন ব্যবহার করতে চাই।
দেশটির ভোটাররা মহামারির অবসান এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করবে এমন সরকার দেখতে চান। সম্প্রতি দেশটির দৈনিক স্যানকেইর মতামত জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা চান করোনাভাইরাস মহামারি নিয়েই কিশিদা প্রশাসন সবচেয়ে বেশি কাজ করুক। এরপরই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং কর্মসংস্থানের দিকে সরকারকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।
ইউকিও ইদানাও নেতৃত্বাধীন দেশটির বৃহত্তম বিরোধী রাজনৈতিক দল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্র্যাটস (সিডিপিজে) এবারের এই নির্বাচনের আগে সমলিঙ্গের বিয়ে এবং দম্পতিদের বিভিন্ন ধরনের উপাধি ব্যবহারের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরেছে। কিন্তু এলডিপি সামাজিকভাবে রক্ষণশীল। সমাজে এলজিবিটিকিউ অধিকারের ক্ষেত্রে অগ্রগতি দেখা গেলেও কিশিদা বলেছেন যে, তিনি সমলিঙ্গ বিয়ের পক্ষে নন।
কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্র্যাটসের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো তাদের সর্বনিম্ন জনসমর্থন। দেশটির আসাহি শিমবুন দৈনিকের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা যায়, দেশটির মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষ সিডিপিজেকে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। অন্যদিকে, এলডিপিকে ভোট দিতে চান ৪৭ শতাংশ মানুষ। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগণের এই সমর্থন এক সংখ্যার ঘরে।
এবারের এই নির্বাচনের আগে ইতোমধ্যে দেশটির বেশকিছু জেলায় প্রচারণা শুরু হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে ১৯ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী কিশিদা বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স।