নিজস্ব প্রতিবেদক:
মানিকগঞ্জে পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর ঘরে থাকা মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা নিয়ে বাসা থেকে পালিয়ে যান আসামিরা। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। এরপর অভিযান চালিয়ে চার আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
গ্রেফতাররা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার হুগলাডাঙ্গি গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো.কবির হোসেন (৩০), একই গ্রামের জিতু সরদারের ছেলে মো. রিয়াজ উদ্দিন সরদার রিয়াজ (২৬), বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি গ্রামের মো. শহিদ মন্ডলের ছেলে শাকিল হাসান (১৯) এবং রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বুড়িহাট ফার্ম গ্রামের আতোয়ার আলীর মেয়ে এবং আসামি কবির হোসেনের স্ত্রী আঁখি মনি ওরফে লিপি আক্তার (২০)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, একটি রোপার নুপুর, একটি স্বর্ণের পায়েল, তিনটি স্বর্ণের কানের রিং, একটি স্বর্ণের ব্রেসলেট, একটি স্বর্ণের লকেট ও দুটি স্বর্ণের দুল এবং নগদ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রীর পূর্বপরিচিত হওয়ায় আসামিরা গত শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে মানিকগঞ্জে ভাড়া বাসায় বেড়াতে আসে। এ সময় তাকেসহ তার ছেলে (১২) ও মেয়েকে (৬) ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস, স্পিড ও কোমল পানীয় খাইয়ে অচেতন করা হয়। পরে আসামি রিয়াজ তাকে (কনস্টেবলের স্ত্রী) ধর্ষণ করে। এরপর আসামিরা তাকে হাত, পা ও মুখ বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাসায় থাকা মোবাইল ফোন, কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ঘটনার দিন গত শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিনই নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে পুলিশ কাজ শুরু করে এবং সর্বপ্রথম আঁখি আক্তার লিপিকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুসারে ও তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাকি আসামিদের দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামিনুর রহমান বলেন, গ্রেফতারদের পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে দুপুরে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। আসামিরা প্রাথমিকভাবে হত্যা ও চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান তিনি।
বিএসডি/আইপি