নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় আকস্মিক অতিবৃষ্টির কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা দ্রুত ও কার্যকরভাবে নিরসন সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
শুক্রবার (৩০ মে) ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় জরুরি সাড়াদানকারী দলের (কুইক রেসপন্স টিম) কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, এবার বর্ষা মৌসুমের আগেই ঢাকার আব্দুল্লাপুর খাল, বাউনিয়া খাল, কল্যাণপুর খাল, রুপনগর খাল, মহাখালী খাল সহ প্রায় ২৯টি খালের ১০০ কিলোমিটারের বেশি এলাকা দখলমুক্ত করে পানির প্রবাহ সৃষ্টি করা হয়েছে। যার কারণে আকস্মিক বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা দ্রুত ও কার্যকরভাবে নিরসন সম্ভব হয়েছে ।
গতকাল সকাল থেকে ঢাকায় অকষ্মিক অতি বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ডিএনসিসি জরুরিভিত্তিতে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করে, হটলাইন নম্বর চালু করে এবং জরুরি সাড়াদানকারী দল (কুইক রেসপন্স টিম) গঠন করে।
এর আগে গত রাত ৩টায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে ভবিষ্যতে আরও কার্যকর উপায়ে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য এবার বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ এলাকার হটস্পট জিআইএস ম্যাপের মাধ্যমে চিহ্নিত করে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে(ড্রেনেজ) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা প্রদান করেন ডিএনসিসি প্রশাসক।
ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জরুরি সাড়াদানকারি দলের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় অর্ধশত অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ধানমন্ডি ২৭, আশকোনা, বনশ্রী, বেগুন টিলা, পশ্চিম কাজীপাড়া কাঠালবাগান, মগবাজার ডাক্তার গলি, যমুনা ফিউচার পার্ক, প্যারিস রোড,কাজী পাড়া মেট্রো স্টেশন, কাওলা, খিলক্ষেত বটতলা, কাজীপাড়া বসুন্ধরা লেন, আগারগাঁও ৬০ ফিট ভাঙ্গা ব্রিজ, মিরপুর ১৪, পশ্চিম শেওড়াপাড়া মেট্রো রেল পিলার নাম্বার ৩৬০, রুপনগর রোড নম্বর ৩৩ হতে ৩৯, ইব্রাহিমপুর বাজার, উত্তরা সেক্টর সেক্টর-৩ রোড নম্বর ১৮, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এবং পল্লবী বেগুন টিলা এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন করা হয়েছে।
ডিএনসিসির ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটারা মেইনরোড, ফাসেরটেক সড়ক, ওয়াজউদ্দিন রোড, সরকারবাড়ি মোড়ের জলাবদ্ধতা অভিযোগ প্রাপ্তির ভিত্তিতে রাতের মধ্যেই নিরসন করা হয়েছে বলে এলাকাবাসি জানিয়েছেন বলে ডিএনসিসি দাবি করছে।
এছাড়া আজমপুর রেলগেট হয়ে মাজার রোড ও কসাইবাড়ি রেলগেট হয়ে কাঁচকুড়া পর্যন্ত প্রধান সড়কের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হওয়ায় এসব এলাকায় কোনো জলাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়নি বলে কুইক রেসপন্স টিমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নগরের ভাওয়ালবাগ এলাকা, তেজকুনি পাড়া এলাকা, শামীম সাহেবের বাড়ির রাস্তা, কাওলা এবং বিটিআই গলিতে জমে থাকা পানি রাতের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে বলে টিম জানিয়েছে।
ইতোমধ্যে মিরপুর সেকশন- ১০ গোলচত্তর,কালশী রোড,মিরপুর সেকশন- ০১, রুপনগরের পানি অপসারণ করা হয়েছে। এসব এলাকায় বর্তমানে কোনো জলাবদ্ধতা নেই। বেগুনটিলা ও প্যারিস রোডের জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলমান রয়েছে।
ডিএনসিসির অধীনে ১০টি অঞ্চলে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ২০০ জন কর্মী কাজ করেছেন। ঢাকার জলাবদ্ধতার হটস্পট চিহ্নিত করে দ্রুততার সঙ্গে জল নিষ্কাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কোনো এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিলে ডিএনসিসি হট লাইন নম্বর ১৬১০৬ অথবা কন্ট্রোলরুমের মোবাইল নম্বরে ০১৭৩৩৯৮২৪৮৬ ফোন করে তথ্য প্রদানের জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে।