ধর্ম ডেস্ক:
পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন মসলাজাতীয় উদ্ভিদের নাম আছে। সেগুলোর মধ্যে একটি হলো পেঁয়াজ।
বনি ইসরাঈল জান্নাতের খাবার ‘মান্না-সালওয়া’র পরিবর্তে যেসব খাবার চেয়েছিল, তার একটি ছিল পেঁয়াজ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তোমরা বলেছিলে, হে মুসা! আমরা এ ধরনের খাদ্যে কখনো ধৈর্য ধারণ করব না। সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করো। তিনি যেন ভূমিজাত দ্রব্য শাক-সবজি, কাঁকুড়, গম, মসুর ও পেঁয়াজ আমাদের জন্য উৎপাদন করেন। মুসা বলল, তোমরা কি উত্কৃষ্টতর বস্তুকে নিকৃষ্টতর বস্তুর সঙ্গে বদল করতে চাও? তাহলে কোনো নগরে অবতরণ করো। তোমরা যা চাও, নিশ্চয়ই তা সেখানে আছে। তারা লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্যগ্রস্ত হলো এবং তারা আল্লাহর ক্রোধের পাত্র হলো। এটি এ জন্য যে তারা আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করত এবং নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করত। অবাধ্যতা ও সীমা লঙ্ঘন করার জন্যই তাদের এই পরিণতি হয়েছিল। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৬১)
উক্ত আয়াতে অন্য খাবারের সঙ্গে পেঁয়াজকে নিকৃষ্টতর বলার কারণ হলো, জান্নাতের ‘মান্না-সালওয়া’র তুলনায় দুনিয়ার এসব খাবার তুচ্ছ। তবে এর মানে এই নয় যে এসব খাবার মুসলমানদের জন্য বর্জনীয়। তবে হ্যাঁ, মসজিদে কিংবা কোনো সমাবেশে যাওয়ার আগে কাঁচা পেঁয়াজ ও রসুন খাওয়ার ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা, এর মাধ্যমে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়, যা অন্য মানুষ ও মসজিদে থাকা ফেরেশতাদের জন্য কষ্টের কারণ হবে। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রসুন বা পেঁয়াজ খায় সে যেন আমাদের থেকে দূরে থাকে আর নিজ ঘরে বসে থাকে। ’ (বুখারি, হাদিস : ৮৫৫)
তবে তরকারি ইত্যাদির সঙ্গে পাকানো পেঁয়াজ খেলে যেহেতু তেমন দুর্গন্ধ হয় না, তাই সে ক্ষেত্রে পেঁয়াজ খেয়ে মসজিদে আসার অনুমতি আছে।
মাদান ইবনে আবু তালহা (রহ.) থেকে বর্ণিত, ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেছেন, ‘হে মানুষ! তোমরা দুই ধরনের সবজি খেয়ে থাকো। আমি এতদুভয়কে নিকৃষ্ট মনে করি। তা হলো (কাঁচা) পেঁয়াজ ও রসুন। আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দেখেছি, যখন তিনি কারো থেকে এর গন্ধ পেতেন, তখন তাকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিতেন। এরপর তাকে ‘বাকি’ (একটি জায়গার নাম)-এর দিকে বের করে দেওয়া হতো। অতএব যে ব্যক্তি তা খায়, সে যেন তা পাকিয়ে গন্ধমুক্ত করে ফেলে। ’ (নাসায়ি, হাদিস : ৭০৮)
তাই প্রত্যেকের উচিত মসজিদে কিংবা কোনো সমাবেশে যাওয়ার সময় কাঁচা পেঁয়াজ, রসুন ও মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে এমন খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা।
বিএসডি/আইপি