নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন পেশাজীবীদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপকে ‘নতুন নাটক’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটা নতুন নাটক শুরু করেছে। এই নাটকটা হচ্ছে, তারা এখন বিভিন্ন পেশার লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন। গত পরশু হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা। আমন্ত্রণ জানানো ৩০ জনের মধ্যে এসেছিলেন মাত্র ১২ জন। সেখানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলছেন, এই তামাশাগুলো কেন করছেন?’
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচন কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা আমার কথা নয়, এটা একজন শিক্ষকদের কথা, শিক্ষাবিদের কথা। যেকোনো চিন্তাশীল মানুষ যারা দেশকে ভালোবাসেন তারা জানেন এখন একটা জনগণের সরকারের প্রয়োজন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জনগণের সরকার করতে হলে নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে। আওয়ামী লীগের অধীনে এটা হবে না।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনের বিকল্প নেই।
‘দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চাল-ডাল-তেল-লবণ-চিনি এই জিনিসগুলো দাম কোথাও একশ ভাগ, কোথাও তিনশ ভাগ বেড়ে গেছে। গোটা দেশে একটা নীরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। আপনি যদি দেখেন আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা, রিকশা চালকরা যে পরটা-ভাজি খান তার দামও বেড়ে গেছে। আগে যে পরটা ছিল ৫ টাকা, সেই পরটার দাম ১০ টাকা, যে ভাজির দাম ছিল ৫ টাকা সেটা হয়েছে ১০ টাকা। কিন্তু আয় কিন্তু বাড়েনি।’
‘এই সরকারের মন্ত্রী সাহেবরা বলছেন মানুষের আয় বেড়েছে। তারা বলে যে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে গেছে। কথাটা ঠিক না। মাসে যার এক হাজার কোটি টাকা আয়, আর যার আয় ১৫ হাজার টাকা—এটা কি সমান হলো? সরকার জনগণের সঙ্গে রসিকতা করে, মস্করা করে বলছে, জনগণের আয় বাড়ছে, জনগণ ভালো আছে। আমি বলি, এভাবে মাথাপিছু আয়ের এই শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে মানুষকে বোকা বানিয়ে আপনারা আর কতদিন চলবেন?’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে এই দেশকে তারা দুর্ভিক্ষে ফেলেছে। ৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছে…। আজকে পত্রিকায় দেখলাম, মা তার সন্তানকে খেতে দিতে না পারার জন্য সন্তানের মুখে বিষ তুলে নিজে মৃত্যুবরণ করছে, আত্মহত্যা করছে।’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সমস্ত অর্জনগুলো ধ্বংস করেছে, আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদেরকে পুরোপুরিভাবে ক্রীতদাসে পরিণত করবার জন্য সমস্ত কাজ তারা করে চলেছে।’
জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, উলামা দলের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, কৃষক দলের শাহজাহান সম্রাট, মহিলা দলের পারভীন আখতার, তাঁতি দলের মজিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলমসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বিএসডি/ এলএল