নিজস্ব প্রতিবেদক
পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য সব শ্রমিককে দ্রুত করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল।
শনিবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভা থেকে এ দাবি জানান সংগঠনটির সাবেক মহাসচিব তৌহিদুর রহমান।
তাদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে— লকডাউনের সময় আকস্মিক কর্মস্থলে আসা শ্রমিকদের প্রত্যেককে তিন হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; টিকা দেওয়ার আগ পর্যন্ত সব শ্রমিককে ২৫ শতাংশ ঝুঁকি ভাতা এবং সরকার ঘোষিত কোনো লকডাউনে কাজ করালে ৫০ শতাংশ ভাতা দিতে হবে; সব ধরনের ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে, আগে ছাটাই করা শ্রমিকদের প্রাপ্য আইনানুগ পাওনা পরিশোধ করতে হবে; লকডাউনে সময় সমন্বয়ের নামে কোনো জেনারেল ডিউটি বন্ধ এবং পূর্বে করানো ডিউটির ওভারটাইম দিতে হবে; বর্তমান নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় নিয়ে অবিলম্বে শিল্পাঞ্চলে ভর্তুকি মূল্যে চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি এবং শিশুখাদ্য বিক্রয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে; আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডকে ব্যবসায়িক নৈতিকতা বজায় রেখে দেশীয় মালিকদের সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে; করোনাকালে কোনো কারখানা শ্রমিক ছাঁটাই বা অসন্তোষ দেখা দিলে আলোচনার টেবিলে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে ও কোনোভাবে শ্রমিক বা নেতৃবৃন্দকে আসামি করে ফৌজদারি মামলা দায়েরের মাধ্যমে উত্তেজনা উস্কে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে; শ্রমিক সংগঠন, মালিকপক্ষ এবং সরকারকে যেকোনো সংকট মোকাবিলায় সংলাপের মাধ্যমে প্রণীত সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং শ্রমিকদের নিজস্ব কণ্ঠ সোচ্চারে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং যৌথ দরকষাকষির সুযোগ দেওয়ার পরিবেশ সরকার এবং মালিকদের নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় আইবিসির সাবেক মহাসচিব তৌহিদুর রহমান বলেন, সরকার প্রণোদনার অর্থ মালিকদের দিয়েছে। সরকার করোনাকালে শতভাগ ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদনে থাকা শ্রমিকদের অর্থনৈতিক সাশ্রয় করার অংশ হিসেবে ভর্তুকি মূল্যে চাল, ডাল, আটা, ভোজ্য তেলসহ শিশু খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করতে কিংবা প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের অংশ হিসেবে ২৫০০ টাকার আর্থিক সহায়তা দিতে পারত।
তিনি বলেন, প্রকৃত অর্থে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শ্রমিকদের নিয়ে কারও কোনো মাথা ব্যথা নেই, খেঁটে যাওয়ার জন্য যাদের জন্ম তাদের আবার দুঃখ কিসের। টিকা দেওয়ার বর্তমান সিদ্ধান্ত বিগত বছরে গ্রহণ করলে শ্রমিককে ঝুঁকি নিয়ে কাজে যেতে হত না। তবে এখনও পর্যন্ত পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের কারখানা পর্যায়ে টিকা দেওয়ার গতি সন্তোষজনক নয়।
সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া শুরু না হওয়াটা দুঃখজনক। শ্রমিকদের সংগঠিত হয়ে কথা বলার অধিকার, জীবনমান উন্নয়ন, চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, জীবনযাপন উপযোগী মজুরি দেওয়ার নিশ্চয়তাই দিতে পারে সুস্থ সবল কর্মক্ষম একেকটি শ্রমিক, যারা আগামী দিনের করোনামুক্ত বিশ্বে পোশাক শিল্পের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা রাখবে।
বিএসডি/এমএম