স্পোর্টস ডেস্ক
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়ের একটি প্যানডোরা পেপারস কেলেঙ্কারি, যাকে পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির পর আর্থিক লেনদেনের সবচেয়ে বড় গোপন নথি ফাঁসের ঘটনা মনে করা হচ্ছে। এ কেলেঙ্কারিতে নাম এসেছে ভারতীয় কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের। শুধু শচীনই নন, নাম এসেছে তার স্ত্রী অঞ্জলি টেন্ডুলকার ও বার্সেলোনার স্প্যানিশ ফুটবলার জেরার্ড পিকের বান্ধবী শাকিরারও। এ ছাড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের ঘনিষ্ট কয়েকজনেরও নাম উঠে এসেছে এতে।
প্রকাশিত গোপন নথিতে দাবি করা হয়, শচীন ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে একটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছিলেন, ২০১৬ সালে সেই বিনিয়োগের অর্থ তুলে নেন। এই বিনিয়োগটি নাকি অবৈধ ও অনৈতিক, দাবি নথি প্রকাশের কর্ণধার অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিআইজের।
কেলেঙ্কারিতে নাম আসার পর শচীনের আইনজীবী বলেছেন, তিনি বৈধ উপায়ে এসব লেনদেন করেছেন। সেগুলোর জন্য কর্তৃপক্ষকে করও প্রদান করেছে টেন্ডুলকার পরিবার। শচীন ছাড়াও পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির পর নতুন করে ফাঁস হওয়া এসব আর্থিক নথিতে বর্তমান ও সাবেক মিলিয়ে অন্তত ৩৫ রাষ্ট্রনেতা এবং বিভিন্ন দেশের তিন শতাধিক সরকারি কর্মকর্তার বিশাল অঙ্কের গোপন লেনদেন এবং সম্পত্তির তথ্য ফাঁস হয়েছে। রোববার বিবিসিসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রায় এক কোটি ১৯ লাখ নথি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য প্রকাশ করে।
প্যানডোরা পেপারস কেলেঙ্কারিতে পানামা, দুবাই, মোনাকো, সুইজারল্যান্ড ও ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া দ্বীপপুঞ্জের মতো বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের একাধিক কোম্পানিতে প্রভাবশালীরা যে অর্থ রেখেছেন ও গোপন লেনদেন করেছেন সেসব তথ্য ফাঁস করা হয়। এসব নথিতে অফশোর কোম্পানিতে নিয়োগকারী হিসেবে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নামও। গোপন লেনদেনের তালিকায় আছেন চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বেবিজ, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লআদিমির জেলেনস্কির নামও।
ফাঁস হওয়া এসব নথিতে দেখা গেছে, জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ গোপনে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও মালিবুতে ১০ কোটি ডলারের সম্পদ সঞ্চয় করেছেন। অন্যদিকে, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তার স্ত্রী লন্ডনে একটি অফিস কেনার সময় তিন লাখ ১২ হাজার পাউন্ড কর ফাঁকি দিয়েছেন। এছাড়াও ফাঁস হওয়া নথিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মোনাকোতে এবং চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বেবিসের ফ্রান্সে বিরাট অঙ্কের গোপন সম্পদের তথ্য বেরিয়ে এসেছে।