নিজস্ব প্রতিবেদক:
অর্থ পাচারের অভিযোগে প্যানডোরা পেপারসে আসা ব্যক্তির নাম নিয়ে মন্তব্য করা যুক্তিযুক্ত হবে না। এখন বিষয়টি উচ্চ আদালতের এখতিয়ারে আছে। মামলাটি চলমান। যেহেতু বিষয়টি একটি মামলার আওতায় চলে গেছে এবং প্রক্রিয়াধীন। ফলে আমার মতামত না দেওয়া উত্তম।
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ওই বৈঠকে ‘ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ প্রকল্প পিপিপিতে বাস্তবায়নের নীতিগতসহ ২২ হাজার কোটি টাকার ১৬ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক বিষয় এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অর্থমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।
এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের বালিয়াপুর থেকে নিমতলী-কেরানীগঞ্জ-ফতুল্লা-বন্দর হয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত হবে এই এক্সপ্রেসওয়ে। প্রায় ১৬ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৩৯ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে।
সভাশেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সামসুল আরেফিন। অতিরিক্ত সচিব বলেন, ৩০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানি করা হবে। ব্যয় হবে ২১৫ কোটি টাকা। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানি হবে। মোট ব্যয় হবে ২৪৮ কোটি টাকা। ২৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে কাতার থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার আনা হবে। সৌদি আরব থেকে আসবে ৩০ হাজার টন। ব্যয় হবে ২৪৮ কোটি টাকা।
‘কুমিল্লা (টমছম ব্রিজ)-নোয়াখালী (বেগমগঞ্জ) আঞ্চলিক মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের পূর্ত কাজের ঠিকাদার নির্মাতা সংস্থা হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেডকে নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ব্যয় হবে ৩৫ কোটি টাকা। রেলওয়ের ৫৮০টি মিটারগেজ ওয়াগন সংগ্রহ করা হবে। ব্যয় হবে ৩৯৮ কোটি টাকা। এর বাইরে ৪২০টি ব্রডগেজ ওয়াগন সংগ্রহের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এজন্য ব্যয় হবে ২৮৯ কোটি টাকা।
এছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪২.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বর্জ্য বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনে দরপ্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিদ্যুৎ কেনা হবে ২৫ বছর মেয়াদে। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১৭.২০ টাকা হিসাবে আনুমানিক ১৪ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এছাড়া পাবনা সুজানগর সাগরকান্দি ইউনিয়নে ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার পার্ক প্রকল্প স্থাপন করা হবে। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ৮.৪৮ টাকা হিসাবে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা।
পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলাধীন কৃষ্ণপুর মৌজায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ কেনা হবে ২০ বছর মেয়াদে। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ৮.১৬ টাকা হিসাবে ১ হাজার ৩২২ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ভোলা মনপুরা দ্বীপে ৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার-ব্যাটারি-ডিজেল সংবলিত হাইব্রিড বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দরপ্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ ক্রয় করা হবে ২০ বছর মেয়াদে।
প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ২১.২৫ টাকা হিসাবে ৪৫৯ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ‘সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় ৬৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার পার্ক প্রকল্প স্থাপনের দরপ্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বাংলাদেশ-চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড দরপ্রস্তাব দাখিল করে।
প্রস্তাবটি আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। ট্যারিফ ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ক্রয় করা হলে ২০ বছর মেয়াদে ওই কোম্পানিকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ৮.১৬ টাকা হিসাবে আনুমানিক ১,৭৯৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
বিএসডি/এসএফ