নিজস্ব প্রতিবেদক,
খুলনার কয়রা উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুইটি পোল্ডারে বাঁধ মেরামতে চলমান প্রকল্পের শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারের লোকজন ভেকু মেশিনের মাধ্যমে বেড়িবাঁধের মূল স্লোভের মাটি কেটে গর্ত সৃষ্টি করেছে। কাজের শুরুতেই এমন অনিয়মে প্রকল্পের স্থায়িত্ব নিয়ে ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধের মূল স্লোভের মাটি কেটে গর্ত করায় অতিবৃষ্টি কিংবা প্রবল জোয়ারে ঐ বাঁধ ধসে যেতে পারে এমন আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে জাইকার অর্থায়নে পাউবোর তত্ত্বাবধানে দরপত্র আহবান করে। দরপত্রের তিনটা প্যাকেজে উপজেলার ঘড়ি লাল বাজার, চরামুখা, মেদেরচর শাকবাড়িয়াসহ নদীতীর রক্ষা প্রকল্পের আওতায় ১২ কোটি টাকা বরাদ্দে বারোটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
এরমধ্যে ১৪/১ নং পোল্ডারে শাকবাড়িয়া গ্রামের কপোতাক্ষ নদের বাম তীর রক্ষা প্রকল্পটি ১ হাজার মিটার দৈর্ঘ্যের ১ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দের ২৭ শতাংশ কম চুক্তি মূল্যে কাজটি পায় এস অনন্ত কুমার বিকাশ ত্রীপুরার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্পের শুরুতেই ঠিকাদারের লোকজন ভেকু মেশিনের মাধ্যমে বেড়িবাঁধের মূল স্লোভের মাটি কেটে গর্ত সৃষ্টি করেছে। যে কারণে অতিবৃষ্টি কিংবা সাধারণ জোয়ারে ওই বাধ ধসে যেতে পারে।
স্থানীয়দের অভিযোগ বাঁধের স্লোভ কাটতে নিষেধ করলেও তারা মানছে না, নির্বিঘ্নে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে প্রকল্পের রিভার সাইডের মূল স্লোভের স্থায়ী মাটি কেটে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি করেছে।
প্রকল্পটিতে গতকাল শুক্রবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় বাঁধের পাশেই গর্ত করে মূল স্লোভের মাটি কাটায় সামান্য বৃষ্টিতেই সদ্য দেওয়া মাটি গর্তে ধসে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, বাঁধের একেবারে কাছে থেকে মাটি কেটে বাঁধ দেয়া হচ্ছে। শুরুতেই এমন অনিয়ম হলে শেষ পর্যন্ত আমরা এই বেড়িবাঁধ দিয়ে সুফল পাবো কিনা জানি না। এমন ভাবে কাজ করতে থাকলে এ বাঁধ বেশি দিন টিকবে না।
স্লোভ কাটার কথা শিকার করে ঠিকাদারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মিজানুর রহমান বলেন, সাব কন্ট্রাক্টে আমরা কাজ করছি। ওখানকার মাটি খুবই নরম স্লোভ না কাটলে ভেকু গাড়ি চালানো যাচ্ছে না, পরে বালু দিয়ে গর্ত গুলো ভরাট করে দেওয়া হবে।
স্লোভ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে কাজের ঠিকাদার জাকির হোসেন মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ভুলবশত যদি স্লোভ কাটা পড়ে থাকে, পরে সেগুলো ভরাট করে দেয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুর রহমান বলেন, জাইকার অর্থায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জাইকার তত্ত্বাবধানে প্রকল্পগুলি দেখভাল করা হচ্ছে। কাজের কোথাও কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে আমার অনেক পরিশ্রম করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবদের সাথে একাধিকবার আলোচনা করে প্রকল্পগুলো আনতে হয়। কিছু অসাধু ঠিকাদার সরকারের এই অর্জনকে বাঁধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিএসডি/আইপি