নিজস্ব প্রতিবেদক
সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্কের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘাতের জেরে কর্মবিরতি পালন করছে বন্দরের প্রাইম মুভার শ্রমিকেরা। চার দফা দাবিতে প্রাইম মুভার শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এর ফলে চট্টগ্রামে বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে কর্মবিরতিতে যান প্রাইম মুভার শ্রমিকরা।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ডিসি পার্কের সামনে ট্রাক ও লরি দাঁড় করানোকে কেন্দ্র করে পার্কের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে চালক ও সহকারীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু স্থানীয় জনতা ও ট্রাক চালকরা পার্কে হামলা চালায়। পরে জেলা প্রশাসনের লোকজন গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রাইম মুভার শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নগরীর কাস্টমস ও সল্টগোলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় শত শত ট্রাক, প্রাইম মুভার ও লরি চালক। ফলে রাস্তার দুপাশেই বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল।
গভীর রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদসহ সংগঠনটির কয়েকজন নেতাকর্মী গিয়ে অবরোধকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর ভোর ৪টার দিকে অবরোধকারীরা সড়ক ছেড়ে গেলে আবারও যানবাহন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু বুধবার সকাল গড়াতেই তারা আবার চার দফা কর্মসূচি দিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন।
শ্রমিকদের দাবি, মঙ্গলবার রাতে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটের ডিসি পার্কে বিএম ডিপোর এক প্রাইম মুভার চালক ও সহকারীদের মারধর করে পার্কের দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি গার্ডরা। পরে শ্রমিকরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের আটকে রাখা হয়।
তারা আরও বলেন, যারা হামলা করেছে তাদের বিচার করতে হবে। না হয় তারা কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন না এবং চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো গাড়ি ঢুকতে দেবেন না।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাইম মুভার ও ট্রেইলার ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক কায়েস চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ডিসি পার্কের কারণে সড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকে। ডিসি পার্ক বন্ধ হবে না হয় বন্দর বন্ধ থাকবে। আমাদের শ্রমিকদের যারা মারধর করেছে তাদের বিচার করতে হবে। তাই আমাদের শ্রমিকরা গাড়ি বন্ধ রেখে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘বন্দর ভবনে বৈঠক ডেকেছে। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব কর্মবিরতি চলবে নাকি চলবে না। আমাদের ৩৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদেরকে চিকিৎসাসেবা দিতে হবে। ডিসি পার্ক বন্ধ করতে হবে। এই ডিসি পার্কের কারণে অহেতুক ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা যানজটে পড়তে হয়।’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, ‘প্রাইম মুভার শ্রমিকরা পণ্য পরিবহন বন্ধ রেখেছে। পণ্য পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়লে কনটেইনার জটের শঙ্কা তৈরি হবে। এ ছাড়া আমদানি ও রপ্তানিকারকরা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’