বর্তমান সময়
  • হোম
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • অর্থনীতি
  • অপরাধ
    • আইন আদালত
  • খেলাধূলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • বিনোদন
    • লাইফস্টাইল
    • পর্যটন
    • যোগাযোগ
  • অন্যান্য
    • সারাবাংলা
    • শিক্ষাঙ্গন
    • আজকের চট্টগ্রাম
    • কৃষি ও পরিবেশ
    • এক্সক্লুসিভ
    • ধর্ম
    • মিডিয়া
    • মুক্তমত
    • রকমারি
    • স্বাস্থ্য
    • সম্পাদকীয়
    • সাক্ষাৎকার
ব্রেকিং নিউজ
‘নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে একাধিকবার থানায় গিয়েছি’
যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের জবাব দিলো ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী
ঢামেকে জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল
মানুষ চায় আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন : আমিনুল হক
‘পুলিশের চাক‌রি করে সকল মানুষকে সন্তুষ্ট করা খুবই ক‌ঠিন’
পাকিস্তানের কাছে পদক হারাল ভারত
ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস, ধীর গতিতে চলছে গাড়ি
ইতালিতে অভিবাসীদের উদ্ধারকারী কর্মীরা বিচারের মুখোমুখি
কেরোসিনের দাম একলাফে বাড়ল ১০ টাকা, কারণ কী?
ঢাকার বাইরেও হচ্ছে বিসিবির অফিস, যেসব পরিকল্পনা বুলবুলের
বর্তমান সময়
  • হোম
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • অর্থনীতি
  • অপরাধ
    • আইন আদালত
  • খেলাধূলা
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • বিনোদন
    • লাইফস্টাইল
    • পর্যটন
    • যোগাযোগ
  • অন্যান্য
    • সারাবাংলা
    • শিক্ষাঙ্গন
    • আজকের চট্টগ্রাম
    • কৃষি ও পরিবেশ
    • এক্সক্লুসিভ
    • ধর্ম
    • মিডিয়া
    • মুক্তমত
    • রকমারি
    • স্বাস্থ্য
    • সম্পাদকীয়
    • সাক্ষাৎকার
ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ 
পরিবেশ মানবজীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা সবাই পরিবেশকে কেন্দ্র করে বেঁচে থাকি এবং নানাভাবে পরিবেশ দূষিত করি। বস্তুত আমরা প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষণ করে চলছি, আর ধ্বংস করছি প্রকৃতির প্রাণ বৈচিত্র্য। সাম্প্রতিককালে পরিবেশ দূষণের একটি প্রধান কারণ হল প্লাস্টিক বর্জ্য।আর আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে যা যা ব্যবহার করি, তার অধিকাংশই প্লাস্টিকের তৈরি।
প্লাস্টিক হচ্ছে কৃত্রিমভাবে তৈরি পলিমার, যা মূলত জীবাস্ম জ্বালানি বা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে রাসায়নিক উপায়ে তৈরি করা হয়। প্লাস্টিক সাধারণভাবে সহজেই বাঁকানো যায় (নমনীয়), ক্ষয়রোধী, দীর্ঘস্থায়ী এবং সস্তা। আলেকজান্ডার পার্কস ১৮৫৫ সালে প্রথম মানবসৃষ্ট প্লাস্টিক আবিষ্কার করেন এবং এর নাম দেন পার্কেসিন। এটি তৈরি করা হয়েছিল উদ্ভিদের সেলুলোজ ও নাইট্রিক অ্যাসিডের মধ্যে বিক্রিয়া করে। তবে ১৯০৭ সালে লিও বেকল্যান্ড সম্পূর্ণ সিনথেটিক প্লাস্টিক আবিষ্কার করেন এবং এর নাম দেন বেকেলাইট। তিনিই প্রথম প্লাস্টিক শব্দটি ব্যবহার করেন।
এছাড়া যে দুজন বিজ্ঞানী প্লাস্টিক উৎপাদনে অনন্য অবদান রাখেন, তারা হলেন নোবেলজয়ী হারমেন স্টাওডিংগার (পলিমার রসায়নের জনক) এবং হারমেন মার্ক (পলিমার পদার্থবিদ্যার জনক)। ডুপনট করপোরেশন কর্তৃক উদ্ভাবিত নাইলন ছিল বাণিজ্যিকভাবে সফল সিনথেটিক থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার। ক্রমে অ্যাক্রাইলিক, পলিস্টাইরিন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড, সিনথেটিক রাবার, পলিইথিলিন (পলিথিন) ইত্যাদি প্লাস্টিকের আবিষ্কারের ফলে জীবনের সব স্তরে প্রয়োজনীয় প্রায় সব দ্রব্য ও দ্রব্যাদির অংশবিশেষ প্লাস্টিক দ্বারা তৈরি হচ্ছে। প্রাকৃতিক ধাতব, প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে তৈরি যেকোনো দ্রব্যের চেয়ে প্লাস্টিক সস্তা, ব্যবহারবান্ধব এবং দীর্ঘস্থায়ী। ফলে বিদ্যুত্গতিতে প্লাস্টিকের ব্যবহার বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এবং অবচেতন মনেই আমরা জল, স্থল ও অন্তরীক্ষের সবকিছুকে প্লাস্টিকদূষণে দূষিত করে ফেলেছি। প্লাস্টিকদূষণ আজ মানুষসহ অন্য সব জীবের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলছে।পরিবেশে পচনরোধী প্লাস্টিকজাতীয় দ্রব্য, উপজাত, কণিকা বা প্লাস্টিকের দ্রব্য নিঃসরিত অণুর সংযোজন; যা মাটি, পানি, বায়ুমণ্ডল, বন্যপ্রাণী, জীববৈচিত্র্য ও মানবস্বাস্থ্যে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে, তাকে সাধারণভাবে প্লাস্টিকদূষণ বলা হয়। গত ৫০ বছরে পৃথিবীতে মাথাপিছু এক টনের বেশি প্লাস্টিকের দ্রব্য উৎপাদন করা হয়েছে।
এসব পচনরোধী প্লাস্টিক বর্জ্যের শতকরা ১০ ভাগ পুড়িয়ে ধ্বংস করা হলেও বাকি ৯০ শতাংশের বেশি বিশ্ব পরিবেশকে নানাভাবে বিপন্ন করে তুলেছে। এসব ক্ষতিকর পচনরোধী বর্জ্য পরিবেশে ৪০০ থেকে ১ হাজার বছর পর্যন্ত থাকতে পারে এবং নানা রকম মাইক্রো বা ন্যানো কণা বা ক্ষতিকর পদার্থ নিঃসরণ করে প্রতিবেশে ও মানবস্বাস্থ্যে ভয়ংকর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পৃথিবীতে প্রতি বছর ৪৫ কোটি টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে যোগ হচ্ছে। এ বর্জ্যের ৫১ শতাংশ উৎপাদন হচ্ছে এশিয়া মহাদেশে। প্লাস্টিকদূষণ বিশ্বের সব দেশে এবং সব পরিবেশে এমনকি মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া, গভীর সমুদ্রের তলদেশ এবং মেরু অঞ্চলেও বিস্তৃত।পরিবেশে অপচনশীল নানা রকম প্লাস্টিক বর্জ্যের সঙ্গে অতিবেগুনি রশ্মি এবং পরিবেশের অন্যান্য উপাদানের মিথস্ক্রিয়ার ফলে মাইক্রো ও ন্যানো প্লাস্টিকের কণা এবং নানা রকম ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ, যেমন বিসফেনল-এ পরিবেশে নির্গত হয়। এসব মাইক্রো ও ন্যানো কণা এবং নিঃসৃত ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মানুষ ও অন্যান্য জীবের হরমোনাল সিস্টেম নষ্ট করতে পারে। ফলে প্লাস্টিকদূষণ মানুষ ও অন্যান্য জীবের প্রজননক্ষমতা নষ্ট করে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রান্ত করে নানা রকম দুরারোগ্য ব্যাধি সৃষ্টি করে। এছাড়া এসব প্লাস্টিক ন্যানো কণা এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মানুষ ও অন্যান্য জীবের কোষাভ্যন্তরে অবস্থিত ডিএনএ ও আরএনএ অণুর মধ্যে পরিবর্তন করে ক্যান্সার বা স্নায়ুতন্ত্র বিকল করতে পারে। তবে একক ব্যবহার পলিথিন ব্যাগ প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক। কারণ এদের যত্রতত্র ব্যবহার এবং ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনার ফলে নিষ্কাশন নালা, খাল ও নদীর প্রবাহ বিনষ্ট হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। আক্রান্ত হচ্ছে জলজ প্রাণী এবং উদ্ভিদের শিকড়ের বিস্তার। এছাড়া এসব পলিথিন বর্জ্যের সর্বশেষ গন্তব্যস্থল হচ্ছে সমুদ্র। প্লাস্টিক বর্জ্য কর্তৃক সামুদ্রিক প্রতিবেশ বিপন্ন হচ্ছে। ফলে  তিমি এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু সামগ্রিকভাবে সামুদ্রিক প্রতিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমাদের পানীয় জলের শতকরা ৮০ ভাগ পানি মাইক্রো ও ন্যানো প্লাস্টিকের কণা দ্বারা দূষিত। এসব অদৃশ্য প্লাস্টিকের কণা ও হরমোনাল সিস্টেমের প্রভাবকারী প্লাস্টিক নিঃসৃত বিষাক্ত দ্রব্যাদি খাদ্যচক্রের মাধ্যমে মানবস্বাস্থ্যকে আরো ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। প্লাস্টিক বর্জ্য নিঃসৃত বিষাক্ত পদার্থ মাটি, পানি ও বায়ুমণ্ডলকে বিষাক্ত করে চলছে। প্লাস্টিক বর্জ্য  পোড়ানোর ফলে ২০১৯ সালে বায়ুমণ্ডলে ৮ দশমিক ৫ কোটি টন কার্বন ডাই-অক্সাইড যোগ হয়েছে। এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের উষ্ণায়নের ১০-১৩ শতাংশ অবদান হচ্ছে প্লাস্টিক বর্জ্য পোড়ানোর মাধ্যমে। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হয়েছে। তার মধ্যে ৭৯ শতাংশ নানাভাবে পরিবেশে জমা হয়ে মানবস্বাস্থ্যসহ প্রকৃতির অন্যান্য জীবের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলেছে। পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ৩৮১ কোটি টন প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত দ্রব্য উৎপাদিত হয়।
এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ হচ্ছে একবার ব্যবহারযোগ্য (সিঙ্গেল ইউজ)। শুধু শতকরা ৯ ভাগ পুনর্ব্যবহার করা হয়। বর্তমান ধারা চলতে থাকলে ২০৩১ সাল নাগাদ পৃথিবীতে প্লাস্টিকের দ্রব্য উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ হবে। প্লাস্টিকদূষণের ফলে প্রতি বছর ১০ লাখ সামুদ্রিক পাখি এবং ১ লাখ সামুদ্রিক প্রাণী মৃত্যুবরণ করে। প্লাস্টিকদূষণের সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে সামুদ্রিক প্রতিবেশ। বিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখেছেন, বর্তমানে সমুদ্রে ৫ দশমিক ২৫ ট্রিলিয়ন মাইক্রো ও ম্যাক্রো প্লাস্টিকের কণা জমা হয়েছে। প্রতি বর্গমাইল সমুদ্রে ৪৬ হাজার টুকরা/কণা প্লাস্টিক জমা হয়েছে। সমুদ্রে জমাকৃত প্লাস্টিকের মোট ওজন ২ লাখ ৬৯ হাজার টন। প্রতিদিন ৮০ লাখ টুকরা প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে পতিত হচ্ছে। এভাবে জমতে জমতে বড় বড় মহাসাগরে প্লাস্টিক বর্জ্য জমাকৃত এলাকা (প্যাচ) তৈরি হয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রশান্ত মহাসাগরে বর্তমানে প্লাস্টিক বর্জ্যের প্যাচের আয়তন প্রায় ১৬ কোটি বর্গকিলোমিটার। অনুরূপ প্লাস্টিক বর্জ্য জমাকৃত এলাকা অন্যান্য মহাসাগর এবং সাগরেও সৃষ্টি হয়েছে। শুধু সমুদ্রের তলদেশ নয়, সমুদ্রের পানির উপরিস্তরের প্রায় শতকরা ৮৮ ভাগ কম-বেশি প্লাস্টিকদূষণে দূষিত। প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক দূষণ সৃষ্টি করছে প্লাস্টিক ব্যাগ বা পলিথিন ব্যাগ। প্রতি মিনিটে ১০ লাখ প্লাস্টিক ব্যাগ আমরা ব্যবহারের পর ফেলে দিচ্ছি। সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর প্লাস্টিক ব্যাগ বর্জ্য ৫০ হাজার কোটি। প্রতি বছর ৮৩০ কোটি প্লাস্টিক ব্যাগ ও প্লাস্টিকের টুকরা আমরা অসচেতনভাবে সমুদ্রসৈকতে ফেলে আসছি। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, ২০২৫ সালে সমুদ্রে মাছের সংখ্যার  চেয়ে প্লাস্টিকের দ্রব্য ও কণার সংখ্যা বেশি হবে। বর্তমানে সমুদ্র থেকে আহরিত প্রতি তিনটি মাছের মধ্যে ১টি মাছের পেটে প্লাস্টিকের দ্রব্য পাওয়া যাচ্ছে। প্লাস্টিকের দ্রব্যের মধ্যে মাইক্রোবিডস থাকে, যা সহজেই পরিবেশ দূষণ করতে পারে। এসব মাইক্রোবিডস জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের অন্যান্য জীবের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। প্লাস্টিক বর্জ্য পোড়ানোর ফলে অদৃশ্য মাইক্রো প্লাস্টিকের কণা ভয়ংকরভাবে বায়ুদূষণ ঘটায়, যা নিঃশ্বাস ও প্রশ্বাসের সঙ্গে আমাদের ফুসফুসে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন এবং দূষণে চীন পৃথিবীর সর্বোচ্চে।
বাংলাদেশে প্রতিদিন আট লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়, তার মধ্যে শতকরা ৩৬ ভাগ পুনর্চক্রায়ণ, ৩৯ ভাগ ভূমি ভরাট এবং বাকি ২৫ ভাগ সরাসরি পরিবেশে দূষক হিসেবে যোগ হচ্ছে। প্লাস্টিকের দ্রব্যাদি মূলত জীবাস্ম জ্বালানি (পেট্রোলিয়াম অয়েল) থেকে পলিমার হিসেবে তৈরি করা হয়। তবে প্রস্তুতকালে নানা রকম সংযোজনকারী জৈব যৌগ যোগ করা হয়। পরিবেশে প্লাস্টিক বর্জ্য নানা রকম মারাত্মক বিপজ্জনক জৈব যৌগ নিঃসরণ করে। তার মধ্যে বিসফেনল-এ, ফথেলেটস, বিসফেনোন, অর্গানোটিনস, পার- এবং পলি ফ্লোরোঅ্যালকাইল পদার্থ এবং ব্রোমিনেটেড ফেইম রিটারডেন্টস উল্লেখযোগ্য। এসব রাসায়নিক পদার্থ মানুষসহ অন্যান্য জীবের হরমোনাল সিস্টেম নষ্ট করে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। এছাড়া প্লাস্টিক বর্জ্য নিঃসৃত এসব রাসায়নিক পদার্থ স্নায়ুতন্ত্র এবং মস্তিষ্কের কোষগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে নানা রকম রোগ সৃষ্টি করতে পারে। ন্যানো প্লাস্টিক বর্জ্য এবং প্লাস্টিক বর্জ্য নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থ জীবের শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন করতে পারে এবং ক্যান্সারসহ নানা রকম দুরারোগ্য ব্যাধির কারণ হতে পারে।
ঢাকা শহরে প্রতিদিন গড়ে ৬৪৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। আমাদের এ প্রিয় শহরে আমরা ১ কোটি ৪০ লাখ পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে অবচেতন মনে অন্যান্য বর্জ্যের সঙ্গে ফেলে দিচ্ছি। একশর বেশি ফ্যাক্টরিতে এসব পলিথিন ব্যাগ তৈরি হয়। পলিথিন ব্যাগের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে জলাবদ্ধতাসহ ঢাকা শহর কতটা বাসযোগ্যহীন এবং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে, তা সবার জানা। পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করে দেশে আইন হয়েছে এক দশকের বেশি আগে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আইনের প্রয়োগের অভাব। পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়ার পর গত এক দশকে ঢাকা শহরে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার বেড়েছে তিন গুণ।
কী সাংঘাতিক পরিসংখ্যান! অর্থনৈতিক ও সামাজিক নানা সূচকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, অথচ নিজ শহরে ভয়াবহ প্লাস্টিকদূষণে নিজেরা প্রতিদিনই অবদান রাখছি। শুধু কি আইনের প্রয়োগের অভাব বলেই আমরা প্রিয় শহর ঢাকাকে বিশ্বখ্যাত বর্জ্যের শহরে পরিণত করব? নাগরিক হিসেবে আমাদের কি কোনো করণীয় নেই। নিশ্চয়ই আছে। আসুন, আমাদের করণীয় নিয়ে কিছু আলোকপাত করি। প্রতিদিনের বাজারে এবং কেনাকাটায় আমারা কি সহজে পচনশীল পাট ও কাপড়ের তৈরি মোড়ক ব্যবহার শুরু করতে পারি না?  পাতলা পলিথিনের পরিবর্তে বারবার ব্যবহারযোগ্য কাপড়, পাট কিংবা শক্ত প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করে আমরা কি একক ব্যবহার পাতলা পলিথিনকে বিদায় জানাতে পারি না? লন্ড্রিতে সম্পূর্ণভাবে পলিথিনের ব্যাগ বন্ধ করে বারবার ব্যবহারযোগ্য কাপড়ের ব্যাগ চালু করা কি খুবই কঠিন? দুধ ও পানীয়জাত দ্রব্যের প্লাস্টিকে বাজারজাত করা বন্ধ করে কাঁচের বোতল ব্যবহার কি বাধ্যতামূলক করা যাবে না? সব রকম পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য আলাদাভাবে প্রতিটি বাসা থেকে সংগ্রহের উন্নত বিশ্বের প্রচলিত কৌশল কি সিটি করপোরেশন আশু শুরু করতে পারে না? আলাদাভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য প্রতিটি ঘর থেকে সংগ্রহ করতে পারলে তা পুনর্চক্রায়ণ করে নতুন উৎপাদন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে নাগরিক সমাজ, সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্লাস্টিকের দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে। ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট এবং অন্যান্য গণ ও সামাজিক মাধ্যমে প্লাস্টিকদূষণের কারণ, ক্ষতিকর দিক ও পরিত্রাণের উপায় নিয়ে ব্যাপক প্রচার করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা আশু প্রয়োজন নয় কি?পাটকে বাংলাদেশের সোনালি আঁশ নামে অভিহিত করা হতো।এটি এক বিশ্বময়কর প্রাকৃতিক আঁশ, যা ১০০-১২০ দিনে পাট গাছের কাণ্ডে তৈরি হয়। একসময় এ দেশের রফতানি আয়ের সিংহভাগ আসত পাট ও পাটজাত দ্রব্য থেকে।
করোনাকালে অনলাইন শপিং ও অনলাইন ফুড ডেলিভারিতে ব্যবহূত নানা রকম প্লাস্টিকের মোড়ক, ওয়ানটাইম/ডিম্পোজিবল চামচ, গ্লাস ইত্যাদি প্লাস্টিকদূষণের গতিতে নতুন মাত্রা যোগ করছে। প্লাস্টিকদূষণ রোধে প্রাকৃতিক পলিমারের মাধ্যমে বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক তৈরির প্রযুক্তি আবিষ্কার হয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্য সচেতনভাবে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে বাণিজ্যিক পুনর্চক্রায়ণ, প্লাস্টিকের বিকল্প পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার, একক ব্যবহার পলিথিন ব্যবহারের পরিবর্তে কাপড়ের, কাগজের কিংবা বহুবার ব্যবহারযোগ্য ব্যাগের ব্যবহার এবং প্লাস্টিকদূষণ সম্পর্কে স্কুলের পাঠ্যসূচিতে তথ্য সংযোজনের মাধ্যমে সচেতন নাগরিক তৈরি কার্যকরী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।
প্লাস্টিকদূষণ বিশ্বব্যাপী এক জটিল সমস্যা; যা পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য, অর্থনীতি ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য এক বিরাট হুমকি। পরিবেশকে বিপন্নকারী পৃথিবীর শতকরা ৫১ ভাগ প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে শুধু এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে যোগ হচ্ছে, যা সব ধরনের বর্জ্যের শতকরা ৮ ভাগ।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি ও এশিয়ান বিজ্ঞান একাডেমিগুলোর দুদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে প্লাস্টিকদূষণ মোকাবেলায় যেসব সুপারিশ গৃহীত হয় তা হচ্ছে: ১) বিশ্বব্যাপী ও আঞ্চলিক পর্যায়ে প্লাস্টিকদূষণ ব্যবস্থাপনা প্রণীত আইন ও নীতিমালাকে হালনাগাদ করতে হবে; ২) বাংলাদেশে প্লাস্টিকদূষণ ব্যবস্থাপনায় প্রণীত আইনের কঠোর বাস্তবায়ন করতে হবে; ৩) পরিবেশ সুরক্ষা নীতি ও প্লাস্টিকদূষণ নীতিমালাকে সমন্বয় করে আধুনিক জ্ঞানের ভিত্তিতে তা হালনাগাদ করতে হবে; ৪) প্লাস্টিকের দ্রব্যকে বারবার ব্যবহার ও পুনর্চক্রায়ণকে (রিসাইক্লিং) উৎসাহিত করতে হবে; ৫) যদিও আমাদের জীবনে প্লাস্টিকের দ্রব্যের ভূমিকা স্বীকার্য, তবে তা ব্যবহারে সতর্কতা এবং পরিমিতি আবশ্যক; ৬) পরিবেশে সহজে পচনশীল (বায়োডিগ্রেডেবল) প্লাস্টিকের ব্যবহারকে উৎসাহিতকরণ এবং পাটের তৈরি সোনালি ব্যাগ ও অন্যান্য পাটজাত দ্রব্যকে প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহারে প্রণোদনা প্রদান করতে হবে; ৭) বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে পলিথিন ও প্লাস্টিকের অন্যান্য দ্রব্যের ব্যবহার সীমিতকরণ এবং পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
পরিবেশকে আমরা যতখানি দেব পরিবেশ ঠিক আমাদের ততখানিই ফেরত দেবে৷ তাই পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে প্লাস্টিক দ্রব্য ব্যবহার কমিয়ে আনার ব্যাপারে সবাইকে তৎপর হতে হবে এবং ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্য যত্রতত্র না ফেলে এগুলো নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। আমাদের সবার এ বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন যে, আমরা যত দ্রুত প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার থেকে নিজেদের বিরত রাখব, তত দ্রুত প্লাস্টিক-দূষিত পরিবেশ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারব।
লেখক,সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক স্বাস্থ্য তথ্য 
স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক,সবুজ আন্দোলন কার্যনির্বাহী পরিষদ। 
কো.চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রোগী কল্যাণ সোসাইটি 
০ মন্তব্য
0
FacebookTwitterPinterestLinkedinWhatsappEmail
পূর্ববর্তী পোস্ট
দল ছাড়ছেন জামায়াত নেতারা
পরের পোস্ট
মুক্তিযোদ্ধার রক্ত কখনো বেইমানি করে না: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

সম্পর্কিত পোস্ট

নগরবাসীর আস্থার বাহন হয়ে উঠছে মেট্রোরেল

নভেম্বর ১৯, ২০২৩

প্রবল অন্ধকারে আলোর দ্যূতি শেখ হাসিনা

সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩

একজন স্বপ্নদৃষ্টা সাইদুল করিম মিন্টু

নভেম্বর ১২, ২০২২

আশার বাতিঘর দেশরত্ন শেখ হাসিনা

অক্টোবর ৮, ২০২২

অর্থনৈতিক উন্নয়নের রুপকার শেখ হাসিনা

সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২

পাকিস্তানপন্থিদের বিরুদ্ধে নৈতিক সংঘাত ও শেখ রেহানা

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২

শেখ হাসিনা মানুষ হিসেবে কেমন?

সেপ্টেম্বর ২, ২০২২

সুবর্ণজয়ন্তীর শপথ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা

ডিসেম্বর ১৮, ২০২১

ওমিক্রন : অসচেতন সচেতন সমাজ

ডিসেম্বর ১১, ২০২১

বেগম রোকেয়া দিবস :নারী জাগরণের অগ্রদূত

ডিসেম্বর ৯, ২০২১

মতামত দিন উত্তর বাতিল করুন

পরবর্তী বার মন্তব্য করার জন্য এই ব্রাউজারে আমার নাম, ইমেল এবং ওয়েবসাইট সংরক্ষণ করুন।

জনপ্রিয় পোস্ট

  • 1

    শেখ হাসিনা মানুষ হিসেবে কেমন?

    সেপ্টেম্বর ২, ২০২২
  • ঘুরে আসুন মেঘের রাজ্যে

    সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১
  • নারীর ক্ষমতায়ন ও দরিদ্রতা নিরসনে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ — আশা

    ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২২
  • সুখী হওয়ার সাইকোলজিক্যাল টিপস

    আগস্ট ১৮, ২০২১
  • ঘুরে আসুন রাতারগুলে মিঠাপানির বনাঞ্চল

    সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
  • আজই ঘুরে আসুন নিকলী হাওর

    সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১
  • করোনা যুদ্ধে পিছিয়ে নেই ঢাবি – সাক্ষাৎকারে উপাচার্য

    আগস্ট ৩, ২০২১
  • 8

    অর্থ না থাকলে শুভাকাঙ্খীরাও পাশে থাকে না

    জুন ২৮, ২০২২

যোগাযোগ করুন

অফিস: ই ২২/৬ পল্টন চায়না টাউন ৬৭/১ নয়া পল্টন,ঢাকা -১০০০
ফোন: +8801675133344, +8801711356270
ওয়েবসাইট: bortamansomoy.com
ইমেইল: bartomansomoy@gmail.com

সম্পাদকদের বাছাই

  • আশার বাতিঘর দেশরত্ন শেখ হাসিনা

  • স্ত্রী ডিভোর্স দিলেই কি দেনমোহর বাতিল হয়ে যায়?

  • পুরাতন দত্তক আইনে অনিরাপদ এতিমদের ভবিষ্যৎ

  • করোনাকালে ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস

ফেসবুকে সকল নিউজ পেতে লাইক করুন

Facebook
  • About Us
  • Contact Us
  • Privacy Policy

© ২০২৩ বর্তমান সময় । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।

Developed By Deshi Hosting

bn Bengali
bn Bengalien English