আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
এর আগে সুপার টাইফুন হিসেবে চিহ্নিত করা টাইফুন নোরুর প্রভাবে প্রধান দ্বীপ লুজনে ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। এখানেই দেশটির অর্ধেক মানুষ বাস করে। সংখ্যা ১১ কোটির মত।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন লুজনে ‘বিস্ফোরক’ নিয়ে আঘাত হেনেছে ঝড়টি।
এই বছর আঘাত হানা সবচাইতে শক্তিশালি ঝড় নোরু। বুলাকান এলাকার গভর্নর ড্যানিয়েল ফার্নান্দো বলেন, উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় আঘাত হানা ঝড়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ওই পাঁচজন উদ্ধারকর্মীকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
স্থানীয়ভাবে কার্ডিং নামে পরিচিত টাইফুন নোরু রোববার স্থানীয় সময় রাত ৮টা ২০ মিনিটে দ্বিতীয়বার ভূমিতে আছড়ে পড়ার পর এটি দুর্বল হয়।
সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা নাগাদ ঝড়টি ফিলিপাইন ছেড়ে যাবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। ঝড়টি যে পথ দিয়ে যাওয়ার কথা সেসব জায়গার ৭৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন রাজধানী ম্যানিলায় ভয়াবহ বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সোমবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস বলেন, আমার মনে হয় অন্তত এ যাত্রায় আমাদের ভাগ্য ভালোই। এটা স্পষ্ট যে গত দু’দিন ধরে আমরা যা করেছি তা প্রস্তুতি হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে এটা এখনো শেষ হয়নি। আমরা তখনই বিশ্রাম নেব যখন সরিয়ে নেয়া বেশিরভাগ মানুষ তাদের বাড়ি ফিরে যেতে পারবে।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস জরুরি সরবরাহের জন্য আকাশপথ ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেসব জায়গা সবচেয়ে বেশি দুর্গত সেসব জায়গায় পরিস্কার করার যন্ত্রপাতি পাঠাতে বলেছেন।
ম্যানিলার পূর্বাঞ্চলে কুইজন প্রদেশে মৎসজীবীদের আগে থেকেই সাগরে যেতে বারণ করা হয়েছে। কিছু এলাকা বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বিমান এবং ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। লুজনে প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মারকোস সরকারি সব কাজ স্থগিত করেছেন। স্কুলের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ম্যানিলার উত্তর-পূর্বে দিনগালান শহরে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের বাসিন্দাদের বলা হয়েছে তারা যেন আশ্রয়কেন্দ্রে যেয়ে আশ্রয় নেয়। একজন বাসিন্দা এএফপিকে বলেন, আমরা উপকূল থেকে দূরে আছি, তবে আমার চিন্তা হচ্ছে পাহাড়ী ঢল নিয়ে।
সোমবার দেশটির স্টক একচেঞ্জ স্থগিত করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে দেশটির সব জ্বালানি নির্ভর শিল্পকে সর্বোচ্চ সতর্কতা নিতে বলেছেন।
ফিলিপিন্সের রেড ক্রসের চেয়ারম্যান ডিক গর্ডন বলেন, হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবীরা নদীর পানির উচ্চতা, সেতু, পর্বত এই সব স্থান পর্যবেক্ষণ করবে যাতে করে ভূমিধ্বস হলে উদ্ধার অভিযানে কোনো বাধা না আসে।
তিনি বলেন, কোথায় সাহায্য প্রয়োজন হবে সেটার তথ্য জানা কঠিন হতে পারে।
প্রশান্ত মহাসাগরে সাত হাজারের বেশি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে ফিলিপাইন, তাই এখানে ঝড়ের প্রকোপ বেশি। এখানে বছরে প্রায় ২০টির মত ঝড় হয়।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে টাইফুন রাই আঘাত হানলে দেশটিতে চার শ’ মানুষ মারা যায়। ২০১৩ সালে টাইফুন হেইয়ান এ যাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়ে ছয় হাজার তিন শ’ মানুষ মারা যায়।
বিএসডি/কাফি